দিল্লি হিংসা নিয়ে একটি বই প্রকাশের অনুষ্ঠান ঘিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছিল ব্লুমসবুরি। সেখানে হাজির থাকার কথা ছিল বিতর্কিত বিজেপি নেতা কপিল মিশ্রেরও। তারপরই প্রকাশক সংস্থা তরফে জানানো হয়, বইটি আর প্রকাশ করা হবে না। একইসঙ্গে যে অনুষ্ঠান ঘিরে এত বিতর্ক, সে বিষয়ে তাদের কাছে কোনও তথ্য ছিল না বলে দাবি করেছে ব্লুমসবুরি।গত শুক্রবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে যে গত ফেব্রুয়ারিতে দিল্লি হিংসার উপর লেখা বইটি প্রকাশের অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন কপিল। যাঁর বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক মন্তব্যের অভিযোগ উঠেছিল। সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন বিবেক অগ্নিহোত্রী এবং বইটি প্রকাশ করেন বিজেপি সাংসদ ভূপেন্দ্র যাদব। যদিও প্রকাশক সংস্থার দাবি, চলতি মাসে বই প্রকাশের কোনও পরিকল্পনাই ছিল না। একটি বিবৃতি জারি করে বলা হয়েছে, ‘(আগামী) সেপ্টেম্বরে দিল্লি রায়োটস ২০২০ : দ্য আনটোল্ড স্টোরি প্রকাশের পরিকল্পনা করেছিল ব্লুমসবুরি ইন্ডিয়া। তদন্ত এবং লেখকদের নেওয়া সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে বইটিতে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারির তথ্যসমৃদ্ধ রিপোর্টের দাবি তুলে ধরা হয়েছে।’ ব্লুমসবুরির বক্তব্য, ‘আমাদের অজ্ঞাত’-এ বই প্রকাশের ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন লেখকরা। সেই অনুষ্ঠানে যাঁরা উপস্থিত থাকার কথা, ‘তাঁদের উপস্থিতিতে অনুমোদন দিত না’ সংস্থা। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আমরা বইটির তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্লুমসবুরি ইন্ডিয়া মনেপ্রাণে বাকস্বাধীনতাকে সমর্থন করে। কিন্তু একইসঙ্গে সমাজের প্রতি গভীর দায়বদ্ধতাও আছে।’যদিও ব্লুমসবুরির সিদ্ধান্তে অবিচল লেখক তথা মনিকা অরোরা,সোনালি চিতলকার এবং প্রেরণা মালহোত্রা। মনিকা পেশায় আইনজীবী। সোনালি এবং প্রেরণা দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক। বই প্রকাশের অনুষ্ঠানের বিরুদ্ধে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচার চালানোয় ‘বাম উদারপন্থী ও বুদ্ধিজীবী’-দের আক্রমণ শানিয়েছেন তাঁরা। মনিকার বক্তব্য, ‘যদি একটি প্রকাশক সরে যায়, তাহলে ১০ টি উঠে আসবে। বাকস্বাধীনতার মসিহারা এই বইয়ে ভীত হয়ে পড়েছেন। বই প্রকাশ এবং কেউ তা পড়ার আগেই লেখক, প্রকাশক এবং অনুষ্ঠানের অতিথিদের বিরুদ্ধে একত্রিতভাবে আক্রমণ চালিয়েছেন তাঁরা।’তবে ব্লুমসবুরি সরে গেলেও শনিবার রাতেই সেই বইটি অনলাইনে প্রকাশ করেন লেখকরা। হাজির ছিলেন কপিলও। তিনি টুইটারে লেখেন, 'বইটি এখন জনসমক্ষে এসে গিয়েছে।'