গালওয়ান উপত্যকা নিয়ে চিনের কোনও ভিত্তিহীন দাবি যে বরদাস্ত করা হবে না, তা স্পষ্ট করে দিল ভারত। মধ্যরাত পেরিয়ে যাওয়ার পর গালওয়ান উপত্যকা নিয়ে চিনের বিদেশ মন্ত্রকের দাবিকে উড়িয়ে দিল নয়াদিল্লি। একইসঙ্গে বেজিংয়ের দাবি 'অতিরঞ্জিত এবং অসমর্থনীয়' বলে সাফ জানানো হল।বিদেশ মন্ত্রকের তরফে আরও জানানো হয়, সার্বিক পরিস্থিতি 'দায়িত্বপূর্ণভাবে সামলানো' এবং গত ৬ জুন দু'দেশের মিলিটারি কম্যান্ডার পর্যায়ের বৈঠকে যে সিদ্ধান্ত হয়েছিল, তা 'কঠোরভাবে পালন'-এর বিষয়ে একমত হয়েছেন দুই বিদেশমন্ত্রী। মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘অতিরঞ্জিত এবং অসমর্থনীয় দাবি করা এই ধারণার (বিদেশমন্ত্রীদের একমত হওয়ার বিষয়টি) একেবারে উলটো।’দু'দেশের সেনা সংঘর্ষে জড়ালেও প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর হাতেগোনা কয়েকটি জায়গার মধ্যে রয়েছে গালওয়ান উপত্যকা, যেখানে সীমান্ত নিয়ে নয়াদিল্লি এবং বেজিংয়ের পার্থক্য বা বিবাদ কম রয়েছে। যখন পুরনো বিবাদ বাড়ছে, তখন চিনা বিদেশ মন্ত্রকের বিবৃতিকে নয়া জায়গায় ঝামেলা পাকানোর কৌশল হিসেবে দেখছে নয়াদিল্লি।গত মঙ্গলবার সকালে দু'দেশের সেনার সংঘর্ষ নিয়ে সাউথ ব্লকের বিবৃতির কয়েক ঘণ্টা পরেই চিনা সেনার পশ্চিম থিয়েটার কম্যান্ড ঝ্যাং শুইলি প্রথম দাবি করেন, ‘গালওয়ান উপত্যকা এলাকার উপরে চিনের সার্বভৌমত্ব রয়েছে।' অর্থাৎ গালওয়ান উপত্যকা নাকি বরাবর চিনের অংশ ছিল বলে দাবি করেন। একইসঙ্গে সেনা সংঘর্ষের দায় ভারতের উপর চাপিয়ে অভিযোগ করেন, ভারতীয় সেনা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা অতিক্রম করেছে। যদিও সে অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে ভারত। বরং চিনা সেনাই প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা টপকেছে বলে জানিয়েছে নয়াদিল্লি।তারইমধ্যে দৈনন্দিন সাংবাদিক বৈঠকে পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) আধিকারিকের সেই দাবি পড়ে শোনায় চিনা বিদেশ মন্ত্রক। অন্যদিকে, বেজিংয়ের তরফে দু'দেশের বিদেশমন্ত্রীর বৈঠক যে বিবৃতিতে দেওয়া হয়, তাতে সেই বিষয়টি ছিল না। ফলে বিষয়টি কতটা গুরুত্ব সহকারে দেখছে ভারত এবং প্রতিবেশীর ভিত্তিহীন দাবি যে কোনওভাবেই মেনে নেওয়া হবে না, তা বোঝাতেই মধ্যরাত পেরিয়ে বিবৃতি জারি করেছে সাউথ ব্লক।তার আগে চিনা বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর কড়া ভাষায় জানান, চিনের পরিকল্পিত এবং পূর্ব-নির্ধারিত পরিকল্পনার কারণেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিল গালওয়ান উপত্যকা। দু'দেশের সেনার সংঘর্ষ বেঁধেছিল। সেই প্রভাব দু'দেশের সম্পর্কে পড়বে। তবে চিনের তরফে অবশ্য পালটা কড়া বিবৃতি জারি করা হয়েছিল।