তীব্র গ্রীষ্মে নিকেশ হবে বিশ্বে ত্রাস সঞ্চারকারী নোভেল করোনাভাইরাস। এই কারণে দিল্লিতে সংক্রমণের ভয় থাকলেও নিরাপদে রয়েছে দক্ষিণ ভারত। কিছু দিনের মধ্যে স্বস্তি ফিরবে কলকাতাতেও। শুক্রবার এই তথ্য জানিয়েছেন চিকিত্সকরা।কোভিড-১৯ বা করোনাভাইরাস সংক্রমণের সঙ্গে আবহাওয়ার কোনও সংযোগ নেই। এমনই মনে করেছিলেন চিকিত্সকদের একাংশ। এ দিন শীর্ষস্থানীয় স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা কিন্তু সেই বিশ্বাসে জোর আঘাত হেনে জানালেন, ২৬-২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা ও কড়া রোদে টিকতে পারে না চিন থেকে ছড়িয়ে পড়া এই ভাইরাস।এ দিন নয়াদিল্লির ইন্দ্রপ্রস্থ অ্যাপোলো হাসপাতালের রেস্পিরেটরি অ্যান্ড ক্রিটিক্যাল কেয়ার বিভাগের শীর্ষ উপদেষ্টা চিকিত্সক রাজেশ চাওলা জানিয়েছেন, ‘করোনাভাইরাসের বেঁচে থাকা ও সংক্রমণ নির্ধারণ করতে আবহাওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। স্যাঁতসেঁতে ঠান্ডা আবহাওয়ায় এই ভাইরাসের বেড়ে ওঠার সম্ভাবনা অনেক বেশি।’তিনি জানিয়েছেন, ‘দুটি জিনিস এই ভাইরাস একেবারে সহ্য করতে পারে না। সেগুলি হল সূর্যের আলো এবং ২৬-২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা। কড়া রোদে এই ভাইরাসের বৃদ্ধির হার কমে অর্ধেক হয়ে যায়। অর্থাত্ মাত্র আড়াই মিনিটে এসে দাঁড়ায় তার আয়ু। দক্ষিণ ভারতে তাপমাত্রা ২৫-৩২ ডিগ্রির মধ্যে ঘোরাফেরা করে, যা এই ভাইরাসের সংখ্যাবৃদ্ধির জন্য ক্ষতিকর।’এই কারণে উত্তর এবং উত্তর-পূর্ব ভারতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার দেশের অন্যান্য অংশের চেয়ে তুলনায় অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন রাজেশ চাওলা। প্রসঙ্গত, কেরালার যে তিন বাসিন্দা এই ভাইরাস সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন, হাসপাতালে চিকিত্সার পরে সুস্থ হলে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।তাপমাত্রা বাড়ার জেরে ভাইরাস সংক্রমণের হার ওঠা-নামা করায় দিল্লির তুলনায় অনেকটাই নিরাপদে রয়েছে কলকাতা-সহ দক্ষিণ পশ্চিমবঙ্গ। গত দিন দুয়েক অবশ্য নিম্ন চাপের ফলে আকাশ মেঘলা থাকায় এবং বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে তাপমাত্রা বিশেষ বাড়েনি। তবে নিম্নচাপ কেটে গেলেই গ্রীষ্মের আগমনী শোনা যাবে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।আবহাওয়া দফতরের উত্তরাঞ্চলীয় শাখা প্রধান কূলদীপ শ্রীবাস্তবের দাবি, ‘আবহাওয়ার উপর ভিত্তি করে যদি সংক্রমণের পর্যালোচনা করতে হয়, সে ক্ষেত্রে মার্চের ১৩ বা ১৪ তারিখের আগে উত্তর ভারতে তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা নেই। মার্চের ২৪-২৫ তারিখ পর্যন্ত সন্ধ্যা ও ভোরে ঠান্ডা বহাল থাকবে।’শুক্রবার দিল্লিতে আরও এক ব্যক্তির শরীরে নোভেল করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। তাঁকে নিয়ে ভারতে এই সংক্রমণের শিকার হলেন ৩১ জন। সংক্রমণের আশঙ্কায় ২৮,০০০ জন নজরাধীন রয়েছেন। দোলের আগে এই সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কায় দিল্লির বাসিন্দারা।