বাংলাদেশে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে৷ মঙ্গলবারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ﷽১১ হাজার ৫২৫ জন করোনা আক্রান্তকে শনাক্ত হয়েছে৷ এটা সংক্রমণের নতুন রেকর্ড৷ মারা গিয়েছ🌄েন ১৬৩ জন৷ তাই এখন প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশে চলমান ‘কঠোর লকডাউনে’ এই সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব কিনা?
১ জুলাই থেকে বাংলাদেশে কঠোর লকডাউন শুরু হয়েছে৷ চলবে ১৪ জুলাই পর্যন্ত৷ তবে ইদুল আজহার সময় কী হবে তা এখনও স্পষ্ট নয়৷ জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন অবশ্য বলেছেন, ইদের সময় চলাচলে নিয়ন্ত্রণ থাকবে৷ গরুর হাটকে নিরুৎসাহিত করে অনলাইন হাটের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে৷ কিন্তু ঈদের সময় চলাচল এবং গরুর হাটে নিয়ন্ত্রণ আরোপের স্পষ্ট কোনো নীতিমালা এখনো প্রকাশ করা হয়নি৷ ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন-সহ সারাদেশে গরুর হাট বসানোর পুরো প্রস্তুতি চলছে এবং গরুর হাট কমানোর কেনো নির্দেশনা এখনও দেওয়া হয়নি৷ ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশনে এবার ২৩টি গরুর হাট বসানোর প্রস্তুতি চলছে৷ এর ম꧂ধ্যে দক্ষিণে ১৩টি এব🌸ং উত্তরে ১০টি৷ গত বছরও একই অবস্থা ছিলো৷
আইইডিসিআরের উপদেষ্টা ডা. মুশতাক হোসেন বলেন, ‘এখন যা পরিস্থিতি, তাতে আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে ঈদের সময়৷ গরুর হাট ও মানুষের চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা না গেলে ঈদের পর গ্রাম থেকে শহরে আরো করোনা আসবে৷ আর ইদের আগে যাবে শহর থেকে৷ শহরে ছাড়িয়ে করোনা এখন গ্রামে দাপট দেখাচ্ছে৷’ তাঁর মতে, ܫমসজিদে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না৷ এটা দেখা প্রয়োজন৷ আর গ্রামে অধিকাংশ মানুষই মাস্ক পরছেন না৷
২৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশে 💛৩৬ হাজার ৩৬১টি নমুনা পরীক্ষা করে ১১ হাজার ৫২৫ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত করা হয়েছে৷ শনাক্তের হারও এখন সর্বোচ্চ ৩১.৪৬ শতাংশ৷ চিকিৎসকরা বলছেন, লকডাউন চললেও ⛦ঢিলেঢালা ভাব চলে এসেছে৷ বড় সড়কে যানবাহন চলছে না এটা দেখে বাস্তব অবস্থা বোঝা যাবে না৷ কারণ শহরের অলিতে গলিতে লোকজন আড্ডা দিচ্ছেন, আর গ্রামেও একই অবস্থা৷ স্বাস্থ্যবিধি অনেকেই মানছেন না এবং মাস্ক পরায় ব্যাপক অনীহা৷
ডা. মুশতাক মনে করেন, ‘এই লকডাউনে কতটা সংক্রমণ কমেছে তা ১৪ জুলাইর পর বোঝা যাবে৷ আর মৃত্যূ কমছে কিনা, তা বুঝতে ১৪ জুলাইয়ের পর আরও দুই সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে৷ আশা করি কিছুটা সুফল পাওয়া যাবে৷ তবে আরও বেশি সুফল পেতে হল🎐ে চলাচলের ওপর নি🌠য়ন্ত্রণ আরো কঠোরভাবে আরও করতে হবে৷’
তিনি মনে করেন, ইদের সময় তাই কোনও ছাড় দেওয়া যাবে না৷ সেটা হলে এখনকার লকডা♌উনের কোনও ফলই স্থায়ী হবে না৷ সেটা করতে হলে গরিব মানুষকে খাদ্য আর অর্থ সহায়তা দিতে হবে৷ তা না হলে তাদের ঘরে আটকে রাখা যাবে না৷
সোহরাওয়ার্দি হাসপাতালের ভাইরোলজি বিভাগের চিকিৎসক ডা. জাহিদুর রহমান বলেন, ‘৫০ ভাগ বলা হলেও বাস্তবে মোট আক্রান্তের ৭০ ভাগ এখন গ্রামে৷ শুরুতে ঢাকা হটস্পট হলেও এখন প্রতিটি জেলা উপজেলাই হটস্পট৷ ভারত সীমান্তে ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট আটকাতে না পারায় এই পরিস্থিতি হয়েছে৷ গ্রামে অনেক রোগীর তথ্য আমাদের কাছে নেই৷ তাঁরা হাসপাতালেও যাচ্ছেন না৷ টেস্টও করাচ্ছেন না৷ সর্দি কাশি নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন৷ তাই এবারের লকডাউনের 🎃উদ্দেশ্য হল, ঢাকায় যেন গ্রামের মানুষ আসতে না পারে৷ তবে তার ফল বুঝতে আরও সাত থেকে ১০ দিন অপেক্ষা করতে হবে৷’ তিনি আশা করেন সংক্রমণ কমবে৷ কিন্তু সেটা শতকরা পাঁচ ভাগের নিচে নামিয়ে আনতে হবে৷ তার মতে, ‘সেটা করতে হলে লকডাউন আরও অব্যাহত রাখতে হবে৷ ঈদকে বিবেচনা করলে চলবে না৷ যদি ঈদের সময় ঢিলেঢালা হয়ে যায় তাহলে পরিস্থিতি আরো খারাপ হবে৷’
বাংলাদেশে গড়ে এখন প্রতিদিন ১০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন৷ কিন্তু তাঁদের মধ্যে হাসপাতালে যান পাঁচশর মতো৷ ডা. মোশতাক বলেন, ‘বাকি যারা বাড়িতে থাকেন তাদের ব্যাপারে 𝄹মনিটরিং নেই৷ সেই কারণেও সংক্রমণ বাড়ছে৷’ অবশ্য এই দু'জন চিকিৎসকই মনে করেন, করোনা কার্যꦉকরভাবে ঠেকাতে হলে গণটিকার কোনও বিকল্প নেই৷