প্রাক্তন পোপ বেনেডিক্ট( Former Pope Benedict XVI) প্রয়াত হলেন শনিবার। ৯৫ বছর বয়সে প্রয়াত হয়েছেন তিনি। বিগত দিনে পদ থেকে ইস্তফা দিতে কার্যত বাধ্য হয়েছিলেন তিনি। বিশ্বের খ্রীষ্টান সমাজ মনে রাখবে তাঁকে।গত ১০০০ বছরে তিনিই ছিলেন প্রথম জার্মান পোপ। পোপ ফ্রান্সিসের সঙ্গেও তাঁর সুসম্পর্ক ছিল বলেই খবর। তবে ২০১৩ সালে পদ যাওয়ার পরে ভ্য়াটিকানের মধ্যে তাঁর নিরন্তর উপস্থিতি কার্যত চার্চকে আদর্শগতভাবে দ্বিধাবিভক্ত করে দেয়।খুব ভালো পিয়ানো বাজাতেন পোপ বেনেডিক্ট। গোটা বিশ্বজুড়ে তাঁর নাম ছড়িয়ে পড়েছিল একটা সময়। তবে ভ্য়াটিকানের অভ্যন্তরে নানা আমলাতান্ত্রিকতা, জটিলতার আবর্তে তিনি জড়িয়ে পড়তেন বার বার। তাঁর আট বছরের সময়কালে তিনি বার বার নানা ক্রাইসিসে পড়েছেন।এদিকে যাজকদের মাধ্যমে শিশুদের যৌন হেনস্থার অভিযোগ উঠত বার বারই। তবে বেনেডিক্ট অবশ্য় এই যৌন হেনস্থার ঘটনাকে একেবারে দূর করার ক্ষেত্রে চার্চ যে অসফল সেকথাও কার্যত স্বীকার করে নিতেন তিনি। পাশাপাশি এনিয়ে ক্ষমাও চেয়েছেন তিনি। তবে তিনিই প্রথম পোপ যিনি এই অনাচারের বিরুদ্ধে কড়া হাতে পদক্ষেপ নেওয়া শুরু করেছিলেন।এদিকে ২০২২ সালে তাঁর নিজের দেশ জার্মানিতে একটি স্বাধীন রিপোর্ট উঠে আসে। সেখানে অভিযোগ তোলা হয়, বেনেডিক্ট নিজেও অন্তত চারটি যৌন হেনস্থার ঘটনায় কড়া ব্য়বস্থা নিতে পারেননি। ১৯৭৭-১৯৮২ সাল পর্যন্ত তিনি ছিলেন মিউনিখের আর্চবিশপ। সেই সময় তিনি চারটি ঘটনায় জোরালো পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছিলেন বলে ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছিল।এদিকে এই রিপোর্টে অত্যন্ত বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি। এনিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে একটি ব্যক্তিগত চিঠিও লিখে ফেলেন। সেখানে উল্লেখ করেন ভুল হয়ে গিয়েছিল। এজন্য তিনি ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তবে তাঁর আইনজীবীরা জানিয়েছিলেন, এজন্য সরাসরি তাঁকে দায়ী করা ঠিক নয়।২০১৩ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি। বেনেডিক্ট (Pope Benedict XVI) ল্য়াটিনে ঘোষণা করেছিলেন, তিনি ইস্তফা দিচ্ছেন। গোটা খ্রীষ্টান সমাজ নড়ে গিয়েছিল এই ঘটনায়।বেনেডিক্টের কয়েকটি কথা খুব স্মরণযোগ্য। বছরের শেষ দিনে চলে গেলেন তিনি। তিনি শেষবার এক বিশাল সমাবেশে জানিয়েছিলেন, 'কখনও আনন্দের সময় থাকে। আবার এমন সময়ও থাকে যখন সময়টা ঠিকঠাক থাকে না। কখনও এমন সময় থাকে যখন সমুদ্র উত্তাল থাকে। আর বাতাস বিপরীত থেকে বয়ে যায়। আর তখন মনে হয় ঈশ্বর হয়তো ঘুমোচ্ছেন। ঈশ্বর নিদ্রা গিয়েছেন…'