মৌরবিকাণ্ড সংক্রান্ত মামলায় এবার ঘড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা ওরেভা গোষ্ঠীকে বড় অঙ্কের 'অন্তর্বর্তীকালীন' ক্ষতিপূরণ দিতে বললে গুডরাট হাই কোর্ট। এই মামলার শুনানি চলাকালীন উচ্চ আদালত নির্দেশ দেয়, আপাতত যেন ওরেভা মৃত ব্যক্তি পিছু তাদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেয়। পাশাপাশি ঘটনায় আহতদের পরিবারকেও ২ লাখ টাকা করে দিতে বলা হয়েছে ওরেভাকে। উল্লেখ্য, গতবছর মৌরবিতে যে ব্রিজ ভেঙে পড়েছিল, সেটির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে ছিল ওরেভা। সম্প্রতি এই মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণও করেন সংস্থার কর্ণধার জয়সুখ প্যাটেল। (আরও পড়ুন: এই রাজ্যে বার্ড ফ্লু-তে মৃ♍ত কয়েকশো মুরগি, চিকেন খাওয়া নিয়ে শতর্ক করল সরকার)
এর আগে ওরেভা গোষ্ঠী দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিবার পিছু পাঁচ লাখ এবং আহতদের ১ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূ♕রণ দেওয়ার ঘোষণা করেছিল। তবে আদালত জানায়, এই ক্ষতিপূরণ যথেষ্ট নয়। ইতিমধ্যে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার মিলিয়ে মৃতদের পরিবার পিছু ১০ লাখ ཧটাকা করে দিয়েছে। এই আবহে গুজরাট হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি সোনিয়া গোকানি ও বিচারপতি সন্দীপ ভাটের ডিভিশন বেঞ্চ ওরেভাকে নির্দেশ দেয় যে আপাতত অন্তত ১০ লাখ টাকা করে যেন মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: 'মার্ꩲচেই মুখ্যমন্ত্রী হবেন তেজস্বী', দাবি বিধায়কের, শোরগোল বিহারের রাজনীতিতে
উল্লেখ্য, অজন্তা ঘড়ির প্রস্তুতকারক ওরেভা গ্রুপকে মৌরবি ব্রিজের দেখভালের দায়িত্ব দিয়েছিল মৌরবি পুরসভা। ১৫ বছরের জন্য পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ওরেভা কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছিল সেতুটি। গতবছরের মার্চ মাসে এটি সংস্কারের জন্য জনসাধারণের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফের ২৬ অক্টোবর গুজরাটি নববর্ষে এটি খুলে দেওয়া হয়। সেতুটি খোলার জন্য কোম্পানিকে ফিটনেস সার্টিফিকেট অবশ্য দেওয়া হয়নি পুরসভার তরফে। দুর্ঘটনার পর পুরসভার তরফে দাবি করা হয়, সংস্কার কাজে কোম্পানিটি কী ধরনের সামগ্রী ব্যবহার করেছে সে বিষয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও তথ্য নেই। এই আবহে মৌরবি কাণ্ডে পুলিশ যে চার্জশিট তৈরি করছে, সেখানে ওরেভা গোষ্ঠীর প্রধানকেই মূল অভিযুক্ত করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে জয়সুখকে খুঁজে পাচ্ছিল না পুলিশ। পরে দীর্ঘদিন 'পলাতক' থাকার পর আদালতে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। তার আগে অবশ্য, আমদাবাদ এবং মৌরবিতে জয়সুখের বাসভবনে তল্লাশি চালিয়েছিল পুলিশ। মৌরবি এবং কচ্ছে অবস্থিত ওরেভার কারখানাতেও পুলিশ হানা দিয়েছিল। তবে জয়সুখের খোঁজ পায়নি পুলিশ। অবশেষে ঘটনার বেশ কয়েক মাস পর আদালতের সামনে আত্মসমর্পণ করেন𒁏 ওরেভা প্রধান।
প্রসঙ্গত, গুজরাটের মৌরবি জেলার মচ্ছু নদীর উপর ব্রিটিশ জমানার এক ঝুলন্ত সেতু গতবছর ৩০ অক্টোবরের সন্ধ্যায় ভেঙে পড়ে। সেইসময় ব্রিজে কয়েকশো জন ছিলেন বলে একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে প্রচুর শিশু এবং মহিলা ছিল। এই আবহে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ১৩০ জনেরও বেশি। অনেকেরই দেহ নদীবক্ষে কাদায় আটকে গিয়েছিল। পরে সেতু নিয়ে আদালতের প্রশ্নের মুখে পড়ে মৌরবি পুরসভা। ওরেভা গোষ্ঠীর সঙ্গে চুক্তিতে গলদ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ব💃িরোধীরা এই ❀দুর্ঘটনায় বিজেপি-ওরেভা ‘আঁতাতে’র অভিযোগ তুলেছিল। এদিকে এই বিপর্যয়ের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গুজরাটেই ছিলেন। তাও তিনি মৌরবিতে গিয়েছিলেন ঘটনার দুই দিন পর। তাঁর মৌরবি সফরের আগে হাসপাতাল রঙ করানো হয়েছিল। যা নিয়ে রাজনৈতিক তরজা তুঙ্গে উঠেছিল।