মঙ্গলবার সকালে নয়াদিল্লির হাসপাতালে গণধর্ষণ ও চূড়ান্ত শারীরিক নিগ্রহের শিকার দলিত তরুণীর মৃত্যুর পরে থমথমে হয়ে ওঠে হাথরাসের বুলগাড়ি গ্রামের পরিবেশ। উচ্চ শ্রেণিভুক্ত ঠাকুর ও দলিতদের নিয়ে গড়া এই গ্রামে যাতে উত্তেজনা ছড়িয়ে না পড়ে, সে দিকে নজর রাখছে পুলিশ।বুলগাড়ি গ্রামের ঘটনায় ফের উঠে এসেছে নির্ভয়াকাণ্ডের ভয়াবহ স্মৃতি। ইতিমধ্যে ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়ে বিক্ষোভে নেমেছে কংগ্রেসের নেতৃত্বে বিরোধীরা। বুলগাড়ি গ্রামের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, ‘কেউ ওই ঘটনা সম্পর্কে মুখ খুলতে চাইছে না। আমরা ভাবতেই পারিনি বিষয়টি এত গুরুত্ব পাবে। মেয়েটিকে যখন বড় হাসপাতালে সরিয়ে নেওয়া হল, আমাদের আশা ছিল যে ও বেঁচে ফিরবে।’১৪ সেপ্টেম্বর মায়ের সঙ্গে শস্যখেতে যাওয়ার পরেই নিখোঁজ হয়ে যান ১৯ বছরের ওই তরুণী। পরে তাঁকে মারাত্মক জখম অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাঁর জিভে গভীর ক্ষত ছিল। দুষ্কৃতীরা তাঁকে গলা টিপে খুন করার চেষ্টাও করেছিল। ঘটনায় অভিযুক্ত চার জনকে পরে গ্রেফতার করে পুলিশ। হাথরাস থানার ওসিকে বদলি করে পুলিশ লাইনস-এ পাঠানো হয়। নিগৃহীতার বাড়িতে পাহারার বন্দোবস্ত করা হয়। গ্রামে টহল দিচ্ছে পুলিশ বাহিনী। নিগৃহীতাকে প্রথমে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়। কিন্তু শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি দেখা দিলে তাঁকে নয়াদিল্লির সফদরজং হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানেই মঙ্গলবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়। নিগৃহীতা দলিত তরুণীর মৃত্যুতে অভিযুক্তদের পরিবারের সদস্যরাও হতভম্ব হয়ে পড়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, নিগৃহীতার বাড়ির উলটো দিকেই চার অভিযুক্তরা পরিবার নিয়ে বসবাস করে। ঘটনার পর থেকে তাদের পরিবারের সদস্যরা বাড়ি বাইরে বের হননি। চার দুষ্কৃতীর মধ্যে একজনের ৬ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল এবং দুই শিশুসন্তানও রয়েছে। কিন্তু ঘটনার পরে দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রাম ছেড়েছেন তার স্ত্রী। অন্য দুই অভিযুক্ত অবিবাহিত। চতুর্থ অভিযুক্ত কয়েক বছর আগে আগ্রা থেকে বুলগাড়ি গ্রামে এসে বসবাস শুরু করেছিল। এ দিকে, দলিত তরুণীর ধর্ষণ ও মৃত্যুতে হাথরাস শহরে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। গতকাল কংগ্রেসের নেতৃত্বে বেরিয়েছে মোমবাতি নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল। স্লোগান উঠেছে, ‘হাথরাস কি বেটির সুবিচার চাই।’