সংবিধান সংশোধনের পক্ষে ভোট দিলেন রাশিয়ার অধিকাংশ মানুষ। তার ফলে ২০৩৬ সাল পর্যন্ত রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ক্ষমতা ধরে রাখার রাস্তা পরিষ্কার হয়ে গেল।নির্বাচনী আধিকারিকদের উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা এপি জানিয়েছে, সপ্তাহব্যাপী অধিকাংশ ভোটদান প্রক্রিয়া শেষ হয়ে গিয়েছে। মোটমুটি ২০ শতাংশ গণনা হয়েছে এবং ৭২ শতাংশ ভোটার সাংবিধানিক সংশোধনের পক্ষে রায় দিয়েছেন।করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যে রাশিয়ার প্রথমবার এক সপ্তাহ ধরে গণভোটের আয়োজন করা হয়েছিল। যদিও ক্রেমলিনের সমালোচকদের মতে, ভোটের ফলাফলে কারচুপির জন্য এক সপ্তাহ ধরে ভোটদান প্রক্রিয়া চলেছে। গণভোটকে ঘিরে একাধিক অনিয়মের অভিযোগও উঠেছে। তা নিয়ে মস্কোয় তুমুল বিক্ষোভও হয়। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মস্কো এবং পশ্চিম রাশিয়ার বিভিন্ন অংশে ভোটদানের হার ছিল ৬৫ শতাংশ। কোনও কোনও অঞ্চলে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ ভোট দিয়েছেন বলে দাবি নির্বাচনী আধিকারিকদের। রাশিয়ার পূর্বদিকে অবস্থিত চাচকি উপদ্বীপে তো আবার প্রাথমিক ফলাফল ঘোষণা করে জানানো হয়েছে, ৮০ শতাংশ ভোটার সংবিধান সংশোধনের পক্ষে রয়েছেন।যদিও স্বাধীন ভোট পর্যবেক্ষকরা সেই পরিসংখ্যান নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তেমনই একজন গ্রিগরি মেলকোনয়ান্তস সংবাদসংস্থা এপিকে জানান, অনিয়মের ছবিটা স্পষ্ট। অনেক জায়গাতেই ভোটদানের হার বেশি দেখানো হয়েছে। গণভোটের আগেই রাশিয়ার সংসদে অনায়াসে পাশ হয়ে গিয়েছিল সেই সংশোধনী প্রস্তাব। তাতে সমকামী বিবাহকে নিষিদ্ধ ঘোষণা, আন্তর্জাতিক আইনের উপর রাশিয়ার আইনের আধিপত্যের মতো বিষয়গুলির উপর জোর দেওয়া হয়েছিল। রাজনৈতিক মহলের মতে, সংসদে পাশ হওয়া সত্ত্বেও দেশে তাঁর সমর্থন অটুট প্রমাণ করতেই করোনাভাইরাস পরিস্থিতির মধ্যেও গণভোট আয়োজন করেন পুতিন। ক্রেমলিনের প্রাক্তন রাজনৈতিক পরামর্শদাতা গ্লেন পাভলভস্কি বলেন, 'নিজের অভ্যন্তরীণ বৃ্ত্তের উপর সম্পূর্ণ আস্থা নেই পুতিনের। তিনি জনসমর্থনের এক অকাট্য প্রমাণ চান।'ব্যাপক প্রচার এবং বিরোধীরা সুযোগের সদ্বব্যহার করতে না পারায় গণভোটে দু'দশকের বেশি রাশিয়ার ক্ষমতার শীর্ষে থাকা পুতিনের সেই আশও মিটেছে। তবে ২০২৪ সালে ভোট লড়বেন কিনা, সে বিষয়ে পরে সিদ্ধান্ত নেবেন তিনি। সেই সিদ্ধান্ত যে কী হবে, তা জলের স্পষ্ট রাজনৈতিক মহলের কাছে। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, ২০৩৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতা ধরে রাখার পথ প্রশস্ত হলেও তা আদতে পুতিনের গলায় কাঁটা হয়ে বিঁধতে পারে। কারণ ভোটদানের হার বাড়াতে যে উপায় নেওয়া হয়েছিল এবং ব্যালটের সন্দেহজনক আইনি ভিত্তির জেরে রাশিয়ায় পুতিনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ আরও পুঞ্জীভূত হয়েছে।