ভারত বারবার তাঁর দাবি খারিজ করে দিচ্ছে। তারপরও ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষবিরতি চুক্তির জন্য ক্রেডিট নেওয়া থেকে বিরত থাকছেন না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এবার সবকিছুকে ছাপিয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব ক্যারোলিন লিভিট এমন এক ‘মর্মস্পর্শী কাহিনী’ শোনালেন, যেটাকে ‘গল্প’ বলে উড়িয়ে দিলেন নেটিজেনদের একাংশ। শুধু তাই নয়, হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিবের সেই ‘মর্মস্পর্শী কাহিনী’ নিয়ে এমন-এমন সব কটাক্ষ উড়ে এসেছে, যা ভাইরালও হয়ে গিয়েছে। তারপরও অবশ্য ট্রাম্প থামেননি। কাতারে মার্কিন সেনার সামরিক বাহিনীর সামনে দাঁড়িয়ে ষষ্ঠবারের জন্য ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষবিরতি চুক্তি নিয়ে ক্রেডিট নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ক্যারোলিনের ‘মর্মস্পর্শী কাহিনী’
আর ট্রাম্প ষষ্ঠবার সেই ক্রেডিট নেওয়ার কিছুক্ষণ আগে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব বলেন, ‘আজ সকালে দোহায় প্রাতঃরাশ সারছিলাম। তাঁর হয়ে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানানোর কথা বলেন আমার ওয়েটার। আমি জিজ্ঞাসা করি যে কেন। উনি বলেন যে উনি কাশ্মীরের লোক।'
আরও পড়ুন: ফপর দালালি বরদাস্ত করা হবে না, পাকিস্তান নিয়ে জয়শংকরের রোষের মুখে ট্রাম্প
সেইসঙ্গে হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব বলেন, 'ভারত-পাকিস্তানের সংঘাতের জন্য সম্প্রতি কয়েক সপ্তাহে উনি (ওয়েটার) বাড়ি ফিরতে পারছিলেন না। কিন্তু প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং (মার্কিন বিদেশ সচিব) মার্কো রুবিওয়ের কারণে উনি যে এবার ফিরতে পারবেন, সেটা জানান। উনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে কার্যত পরমাণু যুদ্ধ রুখে দিলেন, সেটার জন্য যথেষ্ট কৃতিত্ব দেওয়া হচ্ছে না।’
‘হৃদয়গ্রাহী কাহিনী’ শুনে চোখে জল নেটপাড়ার
সেই ‘মর্মস্পর্শী কাহিনী’ এবং ‘হৃদয়গ্রাহী কাহিনী’ শুনে চোখে জল চলে এসেছে বলে দাবি করেন নেটিজেনদের একাংশ। কেউ-কেউ তো সরাসরি অভিযোগ করেছেন যে পুরোটা বানিয়ে বলেছেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব। কেউ-কেউ কটাক্ষের সুরে বলেছেন, ইউক্রেনের কোনও রাঁধুনির সঙ্গে দেখা হয়নি?
আরও পড়ুন: দেশজুড়ে ‘বয়কট তুরস্ক’ রব! তুরস্ককে ধাক্কা দিতে এবার ময়দানে ‘জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া’ও
‘এই গল্পটা বেচে দিন’, কটাক্ষ আমেরিকাকে
এক ভারতীয় নেটিজেন বলেন, 'আজ সন্ধ্যায় চোখে জল নিয়ে আমার পরিচারিকা বললেন যে আমার হয়ে ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানাবেন। আমি বললাম যে কেন। উনি বললেন যে ট্রাম্প যদি ১৯৪৭ সালে দেশভাগ না করতেন, তাহলে হারানোর মতো জমিজমা থাকত না ওঁনার দাদু-ঠাকুমার। সত্যিকারের বিশ্বনেতা।' অপর একজন বলেন, ‘এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি।’ একইসুরে একজন বলেন, ‘এই গল্পটা বেচে দিন।’
আরও পড়ুন: অ্যাকশন শুরু! পাকিস্তানের 'ভাই' তুরস্কের সংস্থা ‘সেলেবি এয়ারপোর্ট সাভিসেস’কে নোটিস ধরাল দিল্লি, কী বার্তা?
ট্রাম্পের দাবি বারবার খারিজ করেছে ভারত
যদিও সেইসব কটাক্ষ নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব। ভারত অবশ্য প্রথম থেকেই বুঝিয়ে দিয়ে আসছে যে ৯-১০ মে মধ্যবর্তী রাতে পাকিস্তানের ১১টি বায়ুঘাঁটিতে প্রত্যাঘাত করার পরে পাকিস্তানের সামনে নয়াদিল্লির কাছে মাথানীচু করা ছাড়া কোনও বিকল্প ছিল না। আর সেটাই করেছে পাকিস্তান। ১০ মে দুপুরে ভারতের ডিরেক্টর জেনারেল অফ মিলিটারি অপারেশনস (ডিজিএমও) লেফটেন্যান্ট জেনারেল রাজীব ঘাইয়ের কাছে পাকিস্তান থেকে ফোন আসে। অনুরোধ করা হয় সংঘর্ষবিরতির।