WTC ফাইনাল ও ইংল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ নিয়ে দ্বিধায় রয়েছে আইপিএল-এর দলগুলো। বিদেশি খেলোয়াড়দের অনিশ্চয়তা ফ্র্যাঞ্চাইজিদের চাপ বাড়িয়েছে। আইপিএল পুনরায় শুরু হওয়ার প্রাক্কালে প্লে-অফের দৌড়ে থাকা দল ও ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো বড় ধাক্কা খেলো বলে মনে করা হচ্ছে। এর কারণ হল দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ড তাদের খেলোয়াড়দের ফিরিয়ে নিচ্ছে আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনের জন্য। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ড (CSA) আইপিএলে থাকা তাদের খেলোয়াড়দের ২৬ মে’র মধ্যে ফিরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড়, যা অনেক দলের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দক্ষিণ আফ্রিকা ১১ জুন লর্ডসে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (WTC) ফাইনাল খেলবে এবং তার আগে ৩ জুন জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে একটি প্রস্তুতি ম্যাচও রয়েছে। ফলে, দক্ষিণ আফ্রিকান খেলোয়াড়দের আইপিএলের প্লে-অফে খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
অন্যদিকে, ইংল্যান্ড বনাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ ওডিআই সিরিজ শুরু হচ্ছে ২৯ মে, এবং সেই সিরিজের জন্য বেশ কিছু আইপিএল খেলোয়াড়ের ডাক পড়েছে। ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ড (ECB) তাদের খেলোয়াড়দের IPL শেষে পর্যন্ত রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, কিন্তু বদলানো সূচির কারণে তারা আর সেই প্রতিশ্রুতি রাখতে পারছে না।
কোন দল কীভাবে প্রভাবিত হবে:
গুজরাট টাইটান্স (GT)
জোস বাটলার: ওপেনিংয়ে শুভমন গিল ও সাই সুদর্শনের সঙ্গে দুর্দান্ত জুটি গড়েছেন। তার অনুপস্থিতি দলের ব্যাটিং গভীরতা চাপের মুখে পড়বে।
শারফেইন রাদারফোর্ড: মিডল-অর্ডারে দারুণ কিছু ক্যামিও খেলেছেন, তার বদলে একই মানের কেউ নেই।
কাগিসো রাবাদা: অনুপস্থিত থাকলেও দল ভালো খেলেছে। বিকল্প হতে পারেন জেরাল্ড কোয়েটজি, যিনি WTC দলে নেই।
রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB)
জ্যাকব বেটেল: ইনজুরিতে থাকা ফিল সল্টের পরিবর্তে ওপেন করেছেন, তবে সল্ট ফিরলে প্রভাব কম হবে।
রোমারিও শেফার্ড: দলের গুরুত্বপূর্ণ অলরাউন্ডার, সিএসকের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতানো ইনিংস খেলেছেন। বুধবার বেঙ্গালুরুতে যোগ দিয়েছেন, থাকবেন বলেই মনে হচ্ছে।
জোশ হেজেলউড: দলের প্রধান পেসার, তার অভাবটা বড় হয়ে দেখা দেবে। বিকল্প হিসেবে থাকবেন নুয়ান থুশারা।
আরও পড়ুন … লাহোর কালান্দার্সে কি খেলবেন শাকিব আল হাসান? PSL 2025-এ বাংলাদেশের অরাউন্ডারকে নিয়ে জল্পনা
পঞ্জাব কিংস (PBKS)
মার্কো জানসেন: নতুন বলে কার্যকর, সেরা বিদেশি পারফর্মার ছিলেন। বিকল্প হতে পারেন জেভিয়ার বার্টলেট।
জোশ ইংলিস: তেমন প্রভাব ফেলেননি, প্রভসিমরন সিং রয়েছেন কিপিংয়ের দায়িত্বে।
মার্কাস স্টইনিস: ভালো ফর্মে ছিলেন না, কেবল SRH ম্যাচে আলো ছড়িয়েছেন। বদলি হতে পারেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
মুম্বই ইন্ডিয়ান্স (MI)
রায়ান রিকেলটন: রোহিত শর্মার সঙ্গে দুর্দান্ত ওপেনিং জুটি গড়েছেন, বড় ক্ষতি হতে পারে তার অনুপস্থিতি।
উইল জ্যাকস: ব্যাটিংয়ে আহামরি কিছু না করলেও বল হাতে কিছু ওভার দিয়ে কাজে এসেছেন।
করবিন বোস: স্যান্টনার ইনজুরিতে থাকায় সুযোগ পেয়েছিলেন, স্যান্টনার ফিরলে তার প্রয়োজন নেই।
আরও পড়ুন … আইপিএল ২০২৫: প্লেঅফে উঠতে হলে কোন দলকে কতগুলো জিততে হবে? KKR-র কি কোনও সম্ভবনা রয়েছে?
দিল্লি ক্যাপিটালস (DC)
জ্যাক ফ্রেজার-ম্যাকগার্ক: পারিবারিক কারণে টুর্নামেন্ট ছেড়েছেন, আগেই দল থেকে বাদ পড়েছিলেন।
মিচেল স্টার্ক: শেষ ম্যাচগুলোতে ছন্দে ছিলেন না, এখন বদলি হিসেবে আসতে পারেন মুস্তাফিজুর রহমান (তাঁকে নিয়ে জল্পনা চলছে)।
ত্রিস্তান স্টাবস: মিডল ও লোয়ার অর্ডারে গুরুত্বপূর্ণ ফিনিশার, তার অনুপস্থিতি দলের জন্য বড় ধাক্কা হতে পারে।
কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR)
কোনও বিদেশি খেলোয়াড় প্লে-অফ বা আন্তর্জাতিক ম্যাচের জন্য চলে যাবেন না।
আরও পড়ুন … কোহলি টেস্টে খেলা চালিয়ে যেতে চেয়েছিলেন, নির্বাচক ও বোর্ডের কাছ থেকে সমর্থন পাননি… মহম্মদ কাইফ
লখনউ সুপার জায়ান্টস (LSG)
এইডেন মার্করাম: দলের সেরা ব্যাটারদের একজন। তার থাকা তিনটি ম্যাচেই দরকার। বিকল্প হিসেবে ম্যাথিউ ব্রিটজকে পাওয়া গেলেও মানের দিক থেকে বড় ফারাক।
ইতিমধ্যেই প্লেঅফের দৌড় থেকে ছিটকে গিয়েছে সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (SRH), রাজস্থান রয়্যালস (RR) ও চেন্নাই সুপার কিংস (CSK)। এই অনিশ্চয়তা আইপিএলের শেষ পর্বে ব্যালান্স বিঘ্ন করতে পারে, এবং শেষ মুহূর্তের দলে রদবদলের প্রভাব পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। টাইট পয়েন্টস টেবিলের লড়াইয়ের শেষ ল্যাপের দৌড়টা জমে যাবে।