করোনাভাইরাস সংক্রমণ মূলত বাতাসবাহিত। বিজ্ঞানীদের চাপের মুখে স্বীকার করতে বাধ্য হল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)।মঙ্গলবার জেনিভায় Covid-19 অতিমারী সংক্রান্ত WHO-এর বিভাগীয় প্রধান মারিয়া ফন কারখোভ সাংবাদিক বৈঠকে জানিয়েছেন, ‘Covid-19 সংক্রমণের অন্যতম প্রক্রিয়া যে বাতাসবাহিত, সেই সম্ভাবনা নিয়ে আমরা এর আগে আলোচনা করেছি।’ঘটনা হল, বরাবরই Covid-19 সংক্রমণ বাতাসে উপস্থিত জলকণার মাধ্যমে হচ্ছে বলে জানিয়েছে WHO। বলা হয়েছে, মানুষের হাঁচি, কাশি অথবা কথা বলার সময় নাক-মুখ থেকে বের হওয়া জলকণা বাতাসে ভর করে ছড়িয়ে পড়ে, তবে বেশি দূর সফর করার আগে তা মাটিতে ঝরে পড়ে। গত সোমবার ‘ক্লিনিকাল ইনফেকশাস ডিজিজ’ জার্নালে প্রকাশিত খোলা চিঠিতে WHO-কে উদ্দেশ্য করে ৩২টি দেশের ২৩৯ জন বিজ্ঞানী প্রমাণ দাখিল করে জানান যে, বাতাসে উপস্থিত করোনাভাইরাস নিঃশ্বাসের মাধ্যমে শরীরের ভিতরে প্রবেশ করার পরেই সংক্রমণ ঘটে। যে হেতু দীর্ঘ সময় হাওয়ায় ভেসে থাকতে পারে এই ভাইরাস, সেই কারণে WHO-কে তার আগের পরামর্শজনিত অবস্থান সংশোধনের জন্য তাঁরা আর্জি জানান। গতকাল সাংবাদিক বৈঠকে সংস্থার সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ বিভাগের প্রযুক্তিগত প্রধান বেনেডেটা আলেগ্রান্ৎজি জানিয়েছেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণ যে বাতাসবাহিত, তার প্রমাণ পাওয়া গেলেও এই সম্পর্কে সুনিশ্চিত সিদ্ধান্তে এখনও পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। তবে বিজ্ঞানীদের এই দাবিকে সমর্থন জানাচ্ছে বলেও WHO-এর তরফে ঘোষণা করা হয়েছে।তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রচারিত সংক্রমণের ঝুঁকি সম্পর্কে তত্ত্বে বদল ঘটলে তা বেশ কিছু দেশের স্বাস্থ্যবিধিকে প্রভাবিত করবে বলে মনে করা হচ্ছে। WHO-এর পরামর্শ অনুযায়ী ওই সমস্ত দেশে করোনা সংক্রমণ এড়াতে ন্যূনতম সামাজিক দূরত্ব এখনও পর্যন্ত এক মিটার (৩.৩ ফিট) ধার্য করা রয়েছে। কিন্তু সংক্রমণ বায়ুবাহিত হিসেবে নির্দিষ্ট হলে এই দূরত্ববিধিও পরিবর্তন করতে হতে পারে।গতকাল ফন কারখোভ অবশ্য জানিয়েছেন, আগামী দিনে করোনা সংক্রমণ সংক্রান্ত সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক মতবাদের সারাংশ জনস্বার্থে WHO প্রচার করবে। তিনি বলেছেন, ‘সংক্রমণ রোধের স্বার্থে সাম্প্রতিক ব্যাখ্যা সংবলিত সামগ্রিক সতর্কবার্তা প্রকাশ করা জরুরি। এর মধ্যে শুধুমাত্র সামাজিক দূরত্ব বিধিই নয়, সেই সঙ্গে রয়েছে যে সমস্ত পরিস্থিতিতে ওই বিধি মেনে চলা অসম্ভব, বিশেষ করে স্বাস্থ্যকর্মীদের ক্ষেত্রে, সেখানে মাস্ক ব্যবহারের আবশ্যিকতা অপরিহার্য।’