কিং কোবরার ছোবলে মৃত্যু হল মধ্যবয়স্ক একটি দাঁতালের। ঘটনাটি বিরলতম বলে আক্ষ্যা দিয়েছেন বনকর্তারা। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে আলিপুরদুয়ারের দলসিংহ পাড়ার মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্রের কাছে। এদিন সকালে ওই স্কুলের কাছে একটি মধ্যবয়স্ক দাঁতালের মৃতদেহ দেখতে পান স্থানীয়রা। বনদফতরে খবর দেওয়া হলে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের কর্মীরা। ঘটনাস্থলে এসে তাঁরা দেখতে পান, স্কুলের কাছে মুখ থুবড়ে পড়ে রয়েছে দাঁতালটি। তবে হাতিটির মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা সৃষ্টি হয়। কারণ, বনকর্মীরা পরীক্ষা করে দেখেন যে হাতিটির দেহে কোথাও কোনও আঘাতের চিহ্ন নেই। এমনকী, তার দাঁত দুটোও অক্ষত রয়েছে। তখনই তার মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধন্দে পড়েন বনকর্মীরা। তবে হাতিটিকে উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হলে প্রকাশ্যে আসে আসল ঘটনাটি। ময়নাতদন্তে নিয়োজিত চিকিৎসকরা লক্ষ্য করেন হাতিটির দাঁত ও ঠোঁটের সংযোগস্থলে সাপের কামড়ের চিহ্ন রয়েছে। শুধু তাই নয়, চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে দেখেন, হাতিটির হৃদযন্ত্রের চার পাশে চাপ চাপ রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে।বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের দাবি, এই লক্ষণ একমাত্র কিং কোবরা কামড়ের ফলেই সম্ভব।এই প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গের বন্যপ্রাণ শাখার মুখ্য বনপাল রাজেন্দ্র জাখড় বলেন, ‘এটা ভাবতেই পারছি না যে, কিং কোবরার কামড়ে হাতির মৃত্যু হতে পারে। তবে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা যেহেতু প্রমাণ পেয়েছেন, তখন বিষয়টি নিয়ে ভাবার প্রয়োজন আছে। এই ধরনের বিরল ঘটনা অবশ্যই গবেষণার ক্ষেত্রে অত্যন্ত জরুরী।’ বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের পশ্চিম উপ-ক্ষেত্রের অধিকর্তা প্রবীণ কাসোয়ান বলেন, ‘ হাতিটির ময়নাতদন্তের পর প্রাথমিকভাবে আমরা নিশ্চিত হয়েছি যে, কিং কোবরার কামড়েই তার মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনাটি অত্যান্ত বিরল। হাতির মতোই বুদ্ধিমান স্বভাবের প্রাণীর দেহের এমন স্পর্শকাতর অংশে কি করে কিং কোবরা ছোবল মারল, সে বিষয়ে অবশ্যই গবেষণা করার প্রয়োজন রয়েছে।’এর আগে কখনও কিং কোবরার কামড়ে কোনও হাতির মৃত্যু হয়েছে বলে মনে করতে পারছেন না-কেউই। তবে গত ১০ বছর আগে উত্তরবঙ্গের জঙ্গলে কিং কোবরার ছোবলে একটি গন্ডারের মৃত্যু হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। ফলে বিষয়টিকে বিরলতম আখ্যা দিয়েছেন রাজ্যের বন কর্তারা।