মঙ্গলবার সকালে মৃত্যু হয়েছে দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারের আগের পক্ষের পুত্র প্রীতম দাশগুপ্তের। সাপুরজি আবাসন থেকে দেহ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্ত হয়। জানা যায় অগ্ন্যাশয়ের রক্তক্ষরণের কারণে এই মৃত্যু। কিন্তু ময়নাতদন্তের আগে পর্যন্ত আত্মহত্যার একটি তত্ত্ব খাড়া করা হচ্ছিল বিভিন্ন মহলে। মায়ের নতুন বিয়ের জের কি না, সে প্রশ্নও উঠছিল। বিয়ের পর থেকে দিলীপ ঘোষের সঙ্গে থাকতেন রিঙ্কু। শাপুরজিতে একাই থাকতেন প্রীতম। ফলে মানসিক অবসাদের তত্ত্বও উঠে আসছে। গোটা ঘটনার প্রেক্ষিতে বর্তমানে আঙুল উঠছে রিঙ্কুর দিকে। সমাজমাধ্যম থেকে বিরোধী দল, পরিচিত থেকে অপরিচিতদের অনেকেই রিঙ্কুর বিয়েকে দায়ী করছেন।
আরও পড়ুন - দিলীপ ঘোষের স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারের একমাত্র ছেলে সৃঞ্জয় ওরফে প্রীতমের রহস্যমৃত্যু
রিঙ্কুর উপর অত্যাচার করত রাজা
২৫ বছরের এক যুবকের মৃত্যু নিঃসন্দেহে মর্মান্তিক। কিন্তু ছেলেকে বড় করার জন্য গত ২৫ বছর ধরেই নানা ঘাত-প্রতিঘাতের শিকার হতে হয়েছে মা রিঙ্কুকে। শিকার হতে হয়েছে স্বামীর নির্যাতনের। সোশাল মিডিয়ার হাওয়ার বিপরীতে দাঁড়িয়ে রিঙ্কুর পুরনো পাড়়া হালিশহরের প্রতিবেশীরা সে কথাই বললেন হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে। কথা প্রসঙ্গে উঠে এল রিঙ্কুর প্রাক্তন স্বামী রাজা দাশগুপ্তের বিবিধ ‘কীর্তির’ কথাও। পাড়ার এক বাসিন্দার কথায়, ‘প্রথম থেকেই রিঙ্কুর উপর অত্যাচার করত রাজা। মাঝে মাঝেই সহ্যের সীমা পার করে যেত সেসব।’ শুধু তাই নয়, আরেক প্রতিবেশীর কথায়, ‘রিঙ্কুর বিয়ে নিয়ে আজ অনেক কথা হচ্ছে। রাজা যে রিঙ্কুকে ছেড়ে আরেকটা বিয়ে করেছিল, সে কথা অনেকেই জানেন না। বহু আগেই রিঙ্কু আর প্রীতমকে রীতিমতো পথে বসিয়ে চলে যায় রাজা। আরেকটা বিয়ে করে। সেই পক্ষের একটি মেয়ে রয়েছে। কিন্তু সে বিয়েও টেকেনি। মেয়েকে নিয়ে দ্বিতীয় স্ত্রী আলাদা হয়ে গিয়েছে।’
মদের নেশা ছিল রাজারও
প্রীতমের মৃত্যুর পর দিলীপ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, নেশা করতেন রিঙ্কুর পুত্র। তবে এই নেশারও একটি পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে। রিঙ্কুর পুরনো পাড়ার এক বাসিন্দার মুখে শোনা গেল সেই কথা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মহিলার কথায়, ‘রাজা প্রায় প্রতিদিন মদ খেত ও বাড়ি ফিরে রিঙ্কুর উপর অত্যাচার করত। এলাকার সবাই সে কথা জানে।’ তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মোতাবেক উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা ছিল প্রীতমের। যার জেরে হৃদপিণ্ড, লিভার বড় হয়ে গিয়েছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই প্রতিবেশীর আক্ষেপ, ‘রাজার দুর্ব্যবহার ও অসভ্যতার শিকার হয়েছেন মা। রাজা দ্বিতীয় বিয়ে করার পর রিঙ্কু কীভাবে ছেলেকে মানুষ করেছে, আমরা অনেকেই তার সাক্ষী। ছেলে সাবলম্বী হওয়ার পরেই রিঙ্কু নতুন করে জীবন শুরু করার কথা ভেবেছে। তাঁকে যারা দোষ দিচ্ছেন, তারা সবটা না জেনেই দিচ্ছেন!’