টলিপাড়ার অন্যতম চর্চিত নায়িকা শোলাঙ্কি রায়। ফের ওটিটিতে তাঁর নতুন সিরিজ ‘বিষহরি’ নিয়ে ধরা দিয়েছেন নায়িকা। বছরের শুরুতেই পর পর দুটো কাজ, তবে বি-টাউনের 'খাকি ২' হয়েছে হাতছাড়া। কিন্তু ꦫএই নিয়ে কোনও আফসোস নেই তাঁর মনে, অভিনেত্রী ম🔯তে, মুম্বই নাকি তাঁকে আরও বিনয়ী করেছে। ‘বিষহরি’-এর সেটে সাপের সঙ্গে মোলাকাত থেকে, মায়ানগরীর নানা অভিজ্ঞতার ঝুলি উপুড় করে হিন্দুস্থান টাইমস বাংলার সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায় ধরা দিলেন শোলাঙ্কি।
বছরের শুরুটাই হয়েছে 'ভাগ্যলক্ষ্মী'র হাত ধরে, তারপর ‘বিষহরি’, নতুন বছরের প্রথম দু'মাসে দুটো নতুন কাজ, বছর জুড়ে এমন করেই কি শোলাঙ্কি দর্শকদের চমক দেবেন?
শোলাঙ্কি: না না, আমার মনে হয় না সেটা 𒈔সম্ভব। একটা জিনিস তৈরি করতেই প্রায় এক ম🔥াস মতো সময় লাগে। এই কাজগুলো সব আগের বছর হয়েছিল। কিন্তু বছরের শুরুতেই পরপর দুটো কাজ মুক্তি পেয়েছে, সেটা তো অবশ্যই একটা ভালো লাগার জায়গা।
‘বিষহরি’ দেখে দর্শকরা কী বলছেন?
শোলাঙ্কি: আমি প্রচুর ম্যাসেজ পেয়েছি দর্শক🎀দের থেকেও, আবার আমার পরিচিতদের থেকেও। প্রথমত, এই সিরিজটা দেখতে ভীষণ অন্যরকম লাগছে, কালার প্যালেটটা একদম আলাদা। ট্রেলার দেখেই অনেকের মনে একটা ইন্টারেস্ট তৈরি হয়েছিল। এটা তো পুরোপুরি একটা মাইথোলজিক্যাল গল্প নয়, আবার পুরোপুরি রহস্য গল্পও ন🍃য়, দুটোর মেলবন্ধন বলা চলে।
হ্যাঁ, আপনার চরিত্রটা তো বেশ রহস্যময়ী, তবে 'বোকা বাক্সোতে বন্দি' থেকে শুরু করে 'ভাগ্যলক্ষ্মী' আর এখন 'বিষহরি'তেও রহস্যে ভরা চরিত্রে আপনাকে দেখা গিয়েছে…
শোলাঙ্কি: হ্যাঁ তা বলতে পারেন।
এই ধরনের চরিত্রগুলো কি খুব সচেতন ভাবে বেছে নিচ্ছেন?
শোলাঙ্কি: না না, একদমই সেরকম ব্যাপার না। আগে যে চরিত্রগুলো করেছি সেগুলো না না রকম ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে। তবে হ্যাঁ, আমি নিজেকেও জিজ্ঞাসা করেছি যে, এই ধরনেরই কাজ পর পর কেন করছি আমি? তবে আম🥃ার মনে হয় এটা ঘটনাচক্রে হয়ে গিয়েছে, পরিকল্পিত নয়।
‘ভাগ্যলক্ষ্মী' আমি করতে চেয়েছিলাম মূলত ঋত্বিকদা মৈনাকদ♓ার জন্য, তাছাড়া গল্পটা তো ভীষণ ভালো ছিল, সঙ্গে আমার চরিত্রটা একদম অন্যরকমের। আবার এদিকে ’বিষহরি'র ক্ষেত্রেও আমি কাজটা ভীষণভাবে করতে চেয়েছিলাম। কারণ আমার চরিত্র 'রাজি' নতুন বিয়ে করে আসা অল্পবয়সী একটি মেয়ে, বেশ বুদ্ধিমতী। কিন্তু সে একটা রহস্যে জড়িয়ে পড়ে। পাশাপাশি এতে বেশ কিছু অলৌকꦚিক উপাদানও রয়েছে।
আরও পড়ুন: প্রেমের 🐭দিনে দেবলীনার 'নীল খামে' মোড়া বার্তা, ভ্যালেন্টাইন্স ডে কীভাবে কাটাবেন তিনি?
হ্যাঁ, ‘বিষহরি’-এর সঙ্গে মনসামঙ্গলের তো একটা সুক্ষ্ম যোগ রয়েছে…, কাজটা করার আগে কী অনেকটা পড়াশোনা করতে হয়েছিল?
শোলাঙ্কি: মনসামঙ্গলের যে গল্পটা সেটা তো আমরা সবাই অল্প বিস্তার জানি। আর এই কাজটা করার জন্য আমাকে আলাদা করে সেটা খুব🦋 পড়তে হয়েছে সেরকম নয়। তবে নিজের আগ্রহ থেকে আমি পড়েছি। ‘মনসামঙ্গল’ মূল যে কাব্যটা, সেটা ছাড়াও বিভিন্ন লেখক তাঁদের লেখায় নানা সময় এই গল্পকে না না ভঙ্গিতে দেখানোর চেষ্টা করেছে। সেই রকম বেশ কয়েকটা গল্প আমি পড়ার চেষ্টা করেছিলাম। আসলে গল্পে দেবী মনসার দিকটা ঠিক কী রকম ছিল সেটা বোঝার চেষ্টা করেছি। আর তাছাড়া এই কাব্যের সঙ্গে আধ্যাত্মিক যোগ থাকলেও এখানে কিন্তু সমাজের একটা ভীষণ স্পষ্ট ছবি রয়েছে।
হ্যাঁ, আর এই সবের মধ্য তো সাপেরও বেশ একটা বড় ভূমিকা রয়েছে? সাপে ভয় পান?
শোলাঙ্কি: আগে খুব পেতাম, এখন এই কাজটা করার সূত্রেই অনেকটা কেটে গিয়েছে। আমাদের সেটে একদিন সাপ আনা হয়েছিল। সেখানেই আমার ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ ভয় কেটে গিয়েছে। সেখান থেকে আরেকটা বিষয় উপলদ্ধিও হয়েছে যে, মানুষের থেকে বিষাক্ত বোধ হয় আর কেউ নেই। সাপ সব সব থেকে নির্বিরোধী প্রাণী। কারোর কোনও ক্ষতি করতে চায় না। সে দেখতে পায় না, শুনতে পায় না, শিরদাঁড়া নেই। সে নিজেই সারাক্ষণ আতঙ্কে থাকে। আসলে আমরা য♔াকে বুঝতে পারি না, তাকেই একটা লেভেল দিয়ে দেই। তবে হ্যাঁ আমার এখনও অল্প ভয়ে আছে। ক🍒ারণ অন্য প্রাণীদের কে আমি বুঝতে পারবো, এদের তো খুব একটা বোঝা যায় না। তবে ওই টুকুই না হলে প্রানী হিসেবে ওরা খুব নিরীহ।
আর রোহন ভট্টাচার্যের সঙ্গে তো প্রথম কাজ, কেমন ছিল অভিজ্ঞতা?
শোলাঙ্কি: খুবℱই ভালো। আগে ওঁকে চিনতাম, কিন্তু সেভাবে আলাপ ছিল না। এই কাজের সূত্রেই মূলত আলাপ। ভীষণ ভালো লেগেছে। তবে সেটে সেভাবে আড্ডা দেওয়ার সুযোগ হয়নি। এখন বরং বেশি কথা হয়। অনেকদিন পর একজন ভালো মানুষের সঙ্গে আমার আলাপ হওয়ার সুযোগ হল। পরিষ্কার মাথা এবং মনও। আসলে পরিষ্কার মাথার মানুষ অনেক পাওয়া যায়, কিন্তু পরিষ্কার মনের মানুষ পাওয়া এখন খুব কঠিন। যাইহোক, বৃষ্টির জন্য আমাদের শ্যুটিংয়ে বেশ খানিকটা সমস্যা তৈরি হয়েছিল, তাই খুব একটা কথা বলার সুযোগ তখন হয়নি। তবে একবার এই বৃষ্টির জন্যই আমাদের শ্যুটিং বন্ধ হয়ে যাওয়া আমারা বসে সেদিন আড্ডা দিয়েছিলাম।
রোহন তো এখন বলিউডে কাজ করছেন, আপনিও মুম্বইতে অনেক দিন ছিলেন, এই নিয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে?
শোলাঙ্কি: না না, আসলে শুরুতে জানতাম না রোহন হিন্দি ছবি করেছেন⭕ বলে।
আচ্ছা, তবে আপনি তো এখন কলকাতাতেই থাকছেন, মুম্বই শহর ওখানকার জীবনযাত্রা এগুলো কি মিস করেন?
শোলাঙ্কি: না, কলকাতা আর বম্বে দুটো জায়গাতে আমার জীবনযাত্রা খুব একটা আলাদা ছিল না। তবে হ্যাঁ বম্বেতে স্বাধীনতাটা অনেক বেশি, কারণ সেখানে যেহেতু খুব বেশি মানুষ আমাকে চেনেন না, তাই আমি নিজের মতো করে ঘুরে বেড়াতে পারতাম। তবে আমি তো ওখানে কাজ করিনি, কিন্🙈তু ওখানে আমার প্রচুর মানুষের সঙ্গে দেখা হয়েছে, কথা হয়েছে। ওখানে কেউ হয়তো দু'মাসের মধ্যে কাজ পায়, আবার কেউ দু'বছর পর। কাজের ক্ষেত্রে সবার জার্নি তো এক রকমের হয় না। কিন্তু আমি ওই শহরটাকে খুব মিস করি। আমি এনার্জিতে ভীষণ বিশ্বাস করি, ওই শহরের মধ্যে অদ্ভুত একটা পজিটিভ এনার্জি রয়েছে, ওই এনার্জিটা আমার খুব ভালো লাগে। আমার মনে হয় যে ওই শহরটা সবাইকে স্বাগত জানানোর জন্যই তৈরি হয়েছে। আসলে বম্বে যাচাই করে বিচার করে না।
তার মানে শহরটা নিশ্চয় অনেক কিছু শিখিয়েছে…
শোলাঙ্কি: হ্যাঁ, বম্বে আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। আমাকে আরও বিনয়ী করেছে। ওখানে সারা ভারত থেকে অভিনেতা-অভিনেত্রীরা যান, যাঁরা জীবনে কিছু হতে চান। যেহেতু সবাই একটা স্বপ্ন নিয়ে ওখানে যান, তাই তাঁদের মধ্যে কিছু একটা করার বা হওয়ার খিদে থাকে। নিজের শিল্প𝓀কে আরও ভালো করার তাগিদ থাকে। ওখানে প্রতিযোগিতা অনেক বেশি তাই চর্চাটাও বেশি🐭 হয়। তবে বম্বের পৃথ্বী থিয়েটারটা আমি ভীষণ ভাবে মিস করি। ওখানে এত ভালো ভালো কিছু নাটক দেখেছি যে ওগুলো আমার সারা জীবনের পুঁজি হয়ে থাকবে।
কিন্তু যোগাযোগ কি এখনও আছে মুম্বইয়ের সঙ্গে?
শোলাঙ্কি: হ্যাঁ যোগা🎃যোগ রয়েছে। বিভিন্ন অডিশনের খবর আসছে, আমি অডিশনও দিচ্ছি। দেখ💯া যাক সেখানে যদি কিছু হয়। সেটা তো অবশ্যই জানাবো তবে এখন তো এখানে কাজ করছি এবং ভালোই হচ্ছে।
হ্যাঁ, তবে ওখানে তো ‘খাকি ২’ সিরিজে কাজের একটা কথা হয়েছিল, শেষ পর্যন্ত হল না কেন?
শোলাঙ্কি: হ্যাঁ, ‘খাকি ২’-এ কাজ করার কথা হয়েছিল, আমি মনোনীতও হয়েছিলাম। ওঁদের সঙ্গে কথা হয়💝, তারপর একটা পোশাক পরে ট্রায়ালও দিয়েছিলাম। কিন্তু ওঁরা জানান, 'ক্রিয়েটিভ কল'-এর জন্য আমাকে আর ভাবা হচ্ছে না। এখানে তো আমাদের অভিনেতাদের আর কিছু করার থাকে না।
এই নিয়ে কোনও আফসোস রয়েছে?
শোলাঙ্কি: আফসোস নেই তবে মন অবশ্যই খারাপ হয়েছিল। আমি জানি আমি খুব ভালো অডিশন দিয়েছিলাম। আমি সেই ফিডব্যাকটাও পেয়েছিলাম ওঁদের থেকে। ওখানে ভালো অডিশন হলেও ওঁরা উৎসাহও দেন। ওঁরা আমাকে ফোন করেꦍ বলেছিꩵলেন, 'ভালো অডিশন দিয়েছেন, কিন্তু আমরা দুঃখিত আমরা এটা নিয়ে এগোতে পারছি না, কারণ আমরা একটু অন্য কিছু চাইছি।' পুরোটাই ওঁরা পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দেন। তবে এটা নিয়ে আমার কোনও আফসোস নেই।
কিন্তু সোহম মজুমদার, তিনি তো দারুণ দারুণ সব প্রোজেক্টে কাজ করেছেন, ওঁর সঙ্গে তো আপনার সুসম্পর্ক রয়েছে, তিনি কোনও ভাবে সাহায্য করেননি?
শোলাঙ্কি: এটাতে আমরা একদমই বিশ্বাস করি না। সোহম বরং আমাকে ফিডব্যাক দিয়ে ভীষণ ভাবে সাহায্য করে। কখনও আমার মন রাখার জন্য ও কিছু বলে না বরং এতটাই সত্যি কথা বলে যে রাগ হয়ে যাবে। কিন্তু এটা আমার জন্য খুবই কাজ দিয়েছে। কারণ ভালো কথা তো সবাই বলবে, কিছু মানুষের সত্যি কথা বলাটাও খুব জরুরী। তবে হ্যাঁ ওঁর মা🅺ধ্যমে বেশ কিছু মানুষের সঙ্গে পরিচয়ের সুযোগ হয়েছি। তবে কাজ নিয়ে ওভাবে কিছু বলিনি। এটুকু বলতে পারি সোহমের জন্য আমার জীবন ইতিবাচক ভাবে অনেক ক্ষেত্রে প্রভাবিত হয়েছে।
কিন্তু আপনাদের নিয়ে যে প্রেমের গুঞ্জন, অবশ্য আপনি বরাবর বলে এসেছেন বন্ধু…
শোলাঙ্কি ও আমার ভীষণ ভালো বন্ধু। ওঁর সঙ্গে আমার সেই বন্ধুত্বটা সারা জীবন থাকবে। আর ব্যক্তিগত জীবনটাকে আমি খুব ব্যক্তিগত রাখা পছন্দ করি। আমি চাই আমার কাজ নিয়ে বা আমি মানুষটাকে নিয়ে চর্চা হোক। আমার ব্যক্ꦛতিগত জীবন বা সম্পর্ক নিয়ে নয়। আসলে যে কোনও সম্পর্ক নিয়ে বেশি চর্চা হলেই না সেটা ওই সম্পর্কটাকে প্রভাবিত করে, একটা সময় সম্পর্কটাই নষ্ট হয়ে যায়।
বেশ, কিন্তু আপনি কি সত্যি এখন সিঙ্গল?
শোলাঙ্কি: হ্যাঁ একদম।
বিচ্ছেদই কি এটার অন্যতম কারণ?
শোলাঙ্কি: আমার মনে হয় বিয়ে কিংবা বিচ্ছেদ এগুলো তো আমাদের জীবনের অনেক বড় বড় ঘটনা। বিয়েটা যেমন ভীষণই আনন্দের, বিচ্ছেদটা সেরকমই একটা খুব খারাপ লাগা💖র জায়গা। তো এইগুলো মানুষ হিসেবে অনেকটা ম্যাচিওর করে দেয়। আমার ক্ষেত্রেও এটাই হয়েছে, মানুষ হিসেবে আমি নিজেকে আরও অনেক বেশি চিনতে পেরেছি।
কিন্তু আপনি না বললেও এখন আপনার নতুন ভালোবাসার কথা আমরা কিন্তু জানি…
শোলাঙ্কি: কী বলুন তো?
শুনলাম গাড়ি চালানো শিখছেন....
শোলাঙ্কি: ওহ হ্যাঁ, আমি গাড়ি চালাতে খুবই ভালোবাসি। আমি জানতাম এটা করতে আমার ভালো লাগবে। তবে ওই যা হয়, আমি এ বিষয়🥂ে খুব কুঁড়ে সেজন্য বহুদিন ধরে শিখবো শিখবো করেও শেখা হচ্ছিল না। তবে এখন লাইসেন্সও হয়ে গিয়েছে। এটা হয়তো খুব একটা বড় বিষয় নয়, কিন্তু এটা আমার কাছে খুব বড় একটা বিষয়। তার কারণ আমি এটা অনেকদিন থেকেই করতে চেয়েছিলাম। গাড়ি নিয়ে মাঝে মাঝেই বেরিয়ে পড়ি। একটꦓা চা বা কফি খেয়ে আসি। ওই গাড়িতে বসেই খাই, ওটা আমার মি টাইম বলতে পারেন।