﷽ নাট্যকর্মী তথা গায়ক সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের নামে একাধিক যৌন হেনস্থার অভিযোগে আছে। তা সত্বেও তাঁকে সুমন মুখোপাধ্যায়ের টিনের তলোয়ার নাটকে নেওয়ায় প্রতিবাদে গর্জে ওঠেন একাধিক নাট্যকর্মী। সোশ্যাল মিডিয়ায় একের পর এক পোস্ট করেন ক্ষুব্ধ দামিনী বেণী বসু, গুলশানারা খাতুন, প্রমুখ। আর সেই চাপের ফলেই এদিন মুখোমুখি নাট্যদলের তরফে তাঁদের এই 'ভুল' শুধরে নেওয়া হল।
কী ঘটেছে?
🐷সুমন মুখোপাধ্যায় উৎপল দত্তের বিখ্যাত নাটক টিনের তলোয়ারকে নতুন ভাবে মঞ্চস্থ করছেন। মুখোমুখি নাট্য দলের এই নাটকে দেবশঙ্কর হালদার, শঙ্কর চক্রবর্তী, পৌলমী বসু, প্রমুখ অভিনয় করছেন। আছেন সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ও। তিনি এই নাটকে একটি গান গেয়েছেন। গত ২ মার্চ এই নাটকের প্রথম শো মঞ্চস্থ হয়। তারপরই গুলশানারা খাতুন, সুজয় প্রসাদ চট্টোপাধ্যায়ের মতো শিল্পীরা এই বিষয়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: 🌌জিৎ - অঙ্কুশ ফেল, দেবই সেরা! ‘প্রধান’ পরিচালক অভিজিৎ বললেন, 'বাকিরা নিজেদের সময়ের সঙ্গে...'
ভুল শুধরে নেওয়া
ܫআগেরদিনই মুখোমুখি দলের অন্যতম প্রধান বিলু দত্ত জানিয়েছেন, 'প্রিমিয়ারের এক সপ্তাহ আগে আমরা একজন কাউকে খুঁজছিলাম যিনি গান গাইতে পারেন। তখনই সুদীপ্তর নাম মাথায় আসে। কিন্তু শো মঞ্চস্থ হওয়ার পরই বুঝি একটা মস্ত ভুল হয়ে গিয়েছে। আমরা আমাদের ভুল শুধরে নেব। আমি ক্ষমা চাইছি।'
🐭 এবার জানা গেল এই বিতর্কিত নাটক থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়কে। সোশ্যাল মিডিয়ায় মুখোমুখি নাট্যদলের তরফে বিলু দত্তই এই কথা জানিয়েছেন। তিনি এদিন তাঁর এই পোস্টে লেখেন, 'টিনের তলোয়ার নাটকের সমস্ত কলাকুশলীর তরফে মুখোমুখির যৌথ বিবৃতি, টিনের তলোয়ার প্রযোজনায় সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায় আর অভিনয় করছেন না। প্রথম অভিনয়ের পরই টিনের তলোয়ার প্রযোজনায় ওঁকে আর রাখা হয়নি। সুদীপ্তবাবুকে এই নাটকে যুক্ত করা আমাদের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। সেই ভুল শোধরাতেই প্রথম অভিনয়ের পরেই টিনের তলোয়ার প্রযোজনা থেকে ওঁকে সরে যেতে বলা হয় অবিলম্বে। তারপরে সুদীপ্তবাবুকে বাদ দিয়ে এ নাটকের তিনটি অভিনয় হয়ে গেছে। পরবর্তী অভিনয় ২৭ এপ্রিল একাডেমি ২.৩০।'
কী বলেছেন বেণী?
🧔দামিনী বেণী বসু সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট সুমন মুখোপাধ্যায়ের টিনের তলোয়ার নাটকে যৌন হেনস্থাকারী সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়কে নেওয়ায় বিরোধিতা করেছিলেন। সম্প্রতি সেটা নিয়ে একটি প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম খবর করলেও, পরে সেটা সরিয়ে দেওয়া হয়। এরপরই গোটা বিষয় নিয়ে আরও সরব হয়েছেন বেণী। তিনি OTT Play -কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, ‘সুমন মুখোপাধ্যায়ের টিনের তলোয়ার নাটকে যৌন হেনস্থাকারী সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়কে স্বমহিমায় ফিরিয়ে আনা মেনে নেওয়া গেল না। সুমন মুখোপাধ্যায় যে এই বিষয়ে চুপ করে আছেন সেটাও মানতে পারছি না। আমি যখন সোশ্যাল মিডিয়ায় সুমন মুখোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করলাম এবং সেটা নিয়ে খবর করল প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম, পরে ক্ষমতা প্রদর্শন করে সেটা আবার নামিয়ে নেওয়া হল যে সেটাও মানতে পারছি না। সুদীপ্ত চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে যে আমার প্রতিবাদ সেটা কিন্তু সুমন মুখোপাধ্যায় জানেন।’
🍌 একই সঙ্গে তিনি এই বিষয়ে জানান, ‘চোখের সামনে অন্যায় দেখেও চুপ করে থাকাটা অন্যায়। লালদার মতো মানুষরাই আমাদের প্রশ্ন করতে শিখিয়েছেন। লাথি মেরে ভুলকে ভাঙতে শিখিয়েছেন। প্রতিবাদ করতে শিখিয়েছেন। আমি তাঁর শেখানো পথেই তাঁকে প্রশ্ন করেছি। প্রতিবাদ করেছি। যেখানে খুশি হওয়ার কথা সেখানে আমার শিরদাঁড়া কেন ভাঙতে চাইছেন লালদা? আমি তো তোমায় একটা সঙ্গত প্রশ্ন করেছি। আমি চাই বাংলা থিয়েটার জগৎ থেকে মহিলাদের উপর যাওয়া শারীরিক অত্যাচার, মানসিক অত্যাচার বন্ধ হোক। হেনস্থা বন্ধ হোক। নির্যাতন, শ্লীলতাহানি বন্ধ হোক। নিরাপত্তা দেওয়া হোক। মেয়েদের সমান ভাবা হোক। আমাদের উপর হওয়া অত্যাচার কী আপনি দেখতে পাচ্ছেন না যে এখনও এই বিষয় নিয়ে কথা বলছেন না?’