পড়ুয়াদের স্বাস্থ্য ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে, টিফিনে আমিষ খাবার দিতে বারণ করেছে স্কুল। স্কুলে এসে টিফিনে আমিষ খাওয়া বন্ধ হলে, পড়ুয়াদের মধ্যে সমব্যথী মনোভাব বাড়বে বলেও দাবি করা হয়েছে। এই উদ্দেশ্যেই নয়ডার দিল্লি পাবলিক স্কুলের তরফে, অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে একটি সার্কুলার জারি করা হয়েছে। আর তা দেখেই ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা। তাঁদের প্রশ্ন, দুপুরের খাবার 𝄹পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ হওয়া উচিত। ডিমের মতো প্রোটিন-যুক্ত খাবার না খেলে পড়ুয়ারা পুষ্টি পাবে কীভাবে।
আরও পড়ুন: (Darjeeling Tourist Tax: দার্জিলিংয়ে🅘 বেড়াতে গেলেই দিতে হবে পর্যটন কর, কত টাকা, কোথায় দেবেন? সবটা জানুন)
নয়ডা সেক্টর-১৩২-এ অবস্থিত দিল্লি পাবলিক স্কুলের জারি করা নোটিশ নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে স্কুলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, অভিভাবকরা যেন তাঁদের সন্তানদের লাঞ্চ বক্সে আমিষ খাবার না দেন। স্কুলের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে যে আমরা শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য ও সমব্যথী মনোভাবের কথা বিবেচনা করেই আমিষ ও নিরামিষ খাদ্য সামগ্রী স্কুলে না আনার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। প্রত্যেক শিক্ষার্থী নিজেদের পছন্দের খাবারই খেতে পারবেন। যাতে তাঁরা একসঙ্গে বসে নিজেদের টিফিন উপভোগ করতে পারে, তাই নিরামিষ❀ খাবারের উপর ফোকাস করা উচিত।
অধ্যক্ষ কী বলেছেন
অবস্থা বেগতিক দেখে মুখ খুলেছেন অধ্যক্ষ সুপ্রীতি চৌহান। তিনি বলেছেন যে আমিষ খাবার যেহেতু গরম এবং আর্দ্রতার কারণে দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়, তাই অভিভাবকদের কাছে এই অনুরোধ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে অভিভাবকদের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। আমরা কোনও ধরনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করিনি। তাঁর আরও দাবি, স্কুল একটি বৈচিত্র্যময় পরিবেশ প্রদান করতে চায় এবং শেখাতে চায় যে ভাগ করা ভালো। দুপুরের খাবারের সময় শিক্ষার্থীরা নিজেদের খাবার বন্ধুদের সঙ্গে ভাগ করে নেয়। এই খাবার যদি বাসি হয়ে যায়, তাহলে এটি তাদের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলবে। তাই এই সার্কুলার জারি করা হয়েছে। আমরা প্রতি বছর এই ধরনের সার্কুলার জারি করি। এই বছর এতে নতুন কিছু নেই। পুষ্টিবিদ ডাঃ শ্রেয়𒅌া গোয়েলেরও একই দাবি। তিনি বলেছেন, খাবার একটি ব্যক্তিগত পছন্দ, তবে প্রক্রিয়াজাত আমিষ খাবার অন্যান্য আইটেমের তুলনায় দ্রুত নষ্ট হয়ে যায়।
আরও পড়ুন: (CO💧PD: জীবদ্দশায় সিওপিডি-তে আক্রান্ত ছিলেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, ঠিক কী এই অসুখ?)
শিক্ষার্থীরা কী স্কুলের সঙ্গে একমত
বৃহস্পতিবার কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেছে যে সপ্তাহের কিছু দিন নিরামিষ খাবার খেতে তাদের আপত্তি নেই, তবে এটি তাদের পছন্দের উপর নির্ভর করবে। এটি বাধ্যতামূলক নয়। ডিপিএস-এর সꦛিনিয়র ক্লাসের একজন ছাত্র এ প্রসঙ্গে জানিয়েছে, আমি আমার বন্ধুদের উদ্বেগকে সম্মান করি। যারা নিরামিষ খায়, আমি আমার খাওয়ার সময় তাদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখি।
অভিভাবকদের মতামত কী
বৃ🐲হস্পতিবার জারি করা এমন নোটিশে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকদের একাংশ। তাঁদের দাবি যে স্কুল বাচ্চাদের খাবারের পছন্দটিও নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছে। গৌতম বুদ্ধ নগর প্যারেন্টস ওয়েলফেয়ার সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা মনোজ কাটারিয়া বলেছেন, প্রত্যেক শিক্ষার্থী ভিন্ন সংস্কৃতি থেকে এসেছে এবং তাদের নিজস্ব খাদ্যাভ্যাস রয়েছে। সেখানে হস্তক্ষেপ করা উচিত নয়। এ বিষয়ে প্রাথমিক বিভাগে পড়া এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক, বলেছেন, তাঁদের সন্তান নিরামিষ খাবার খেতে চায় না। নোটিশে সম্মান ও বৈচিত্র্যের কথা বলা হয়েছে। একজনের পছন্দের খাবারের কীভাবে অন্য কাউকে সমস্যায় ফেলতে পারে তা বোঝা কঠিন। নিরামিষ যাঁরা খান, তাঁদের তো আর কেউ নন-ভেজ খেতে বাধ্য করছে না। কিংবা তাঁদের খাবারের ধরনের ওপর কোনও বিধিনিষেধ আরোপও করা হচ্ছে না। তাই এ ধরনের নোটিশ জারি করে কোনও লাভ নেই। অনেকেই আবার স্কুলের এই পদক্ষেপকে সমর্থন করেছেন এবং বলেছেন যে 'স্কুলে আমিষ খাবারের কোনও জায়গা নেই। এখানকার বেশির ভাগ ছাত্রই নিরামিষভোজী। তাই এটা একটা ভালো পদক্ষেপ।
বিতর্ক বাড়তেই নয়ডায় শিক্ষা দফতরের আধিকারিকরা বলেছেন যে অভিভাবকদের যদি এই বিজ্ঞপ্তিতে কোনও আপত্তি থাকে তবে তাঁরা অভিযোগ জানাতে পারেন। জেলা স্কুল পরিদর্শক ধরমবীর সিং জানিয়েছেন, যদি কোনও অভিভাবকের কোনও আপত্তি থাকে এবং স্কুল তাঁদের অভিযোগ না শোনে, তাহ🦩লে তাঁরা শিক্ষা বিভাগের কাছে বিষয়টি জানাতে পারেন। যেহেতু সার্কুলারটি কোনও আদেশ জারি না করে, শুধুমাত্র অভিভাবকদের অনুরোধ করে জারি করা হয়েছে। তাই বিষয়টি খুব একটা উদ্বেগের বিষয় নয়।