নবম শ্রেণির ছাত্রী, ১৩ বছরের কিশোরীকে অপহরণ করে আট দিনে দৈনিক দুই বার গণধর্ষণের অভিযোগে ৮ জনকে গ্রেফতার করেছে মধ্য প্রদেশ পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির (IPC) ৩৭৬ (ডি) এবং যৌন নিগ্রহ দমনে শিশু নিরাপত্তা আইনের (Pocso) নির্দিষ্ট ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অভিযোগের তালিকায় রয়েছে আকাশ সিং, রাহুল কুশওয়াহা, পারশ সোনি, মনু কেওয়াত, ওঙ্কার রাই, ঈতীন্দ্র সিং, রজনীশ চৌধুরী এবং রোহিত যাদব। তাদের সকলের বয়স ২০ ও ২০ এর কোঠায়। সোমবার তাদের আদালতে তোলা হয়েছে।উমারিয়ার পুলিশ সুপার বিকাশ শাহওয়াল জানিয়েছেন, নিগৃহীতা কিশোরী ট্রমা আক্রান্ত হয়েছে। তার কাউন্সেলিং চলছে বলেজানা গিয়েছে।পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, ‘নবম শ্রেণির ওই ছাত্রী বাবার সঙ্গে জবলপুরে থাকে। গত ডিসেম্বর মাসে মায়ের সঙ্গে দেখা করতে সে উমারিয়া এসেছিল। জবলপুর আসার পথে গত ১ জানুয়ারি উমারিয়াতে তার সঙ্গে পরিচয় হয় আকাশ সিংয়ের সঙ্গে। ৪ জানুয়ারি তার সঙ্গে ফের যোগাযোগ করে আকাশ এবং তাকেকাছের এক ধাবায় খাওয়াতে নিয়ে যায়।’পুলিশের অভিযোগ, ৪জানুয়ারি ওই ধাবায় আকাশ সিং, ধাবার মালিক পারশ সোনি এবং এক দোকান মালিক ওঙ্কার রাই কিশোরীকে প্রথম বার ধর্ষণ করে। কিন্তু বাড়ি ফিরে এসেও আতঙ্কে কাউকে কিছু জানায়নি কিশোরী। এর পর ১১ জানুয়ারি নিগৃহীতার সঙ্গে স্থানীয় বাজারে দেখাকরে আকাশ ও রাহুল নামে এক ব্যক্তি। নিজের ভুল স্বীকার করে ক্ষমাচাইতে কিশোরীকে মধ্যহ্নভোজের আমন্ত্রণ জানায় আকাশ। এর পর তাকে জঙ্গলের ভিতরে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে ওই দুই দুষ্কৃতী। এখানেই শেষ নয়, জঙ্গল থেকে নিগৃহীতাকে ফের সোনির ধাবায় নিয়ে গিয়ে রাতভর বন্দি করে রাখে দুষ্কৃতীরা। সেখানে আবার পারশসোনিএবং আরও চার জন তাকে নাগাড়ে ধর্ষণ করে। ছেড়ে দেওয়ার জন্য অনেক অনুনয় করলে সকালে তাকে একটি ট্রাকে তুলে দেওয়া বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ফেরার পথে ট্রাক চালক রোহিত যাদবকে নিগ্রহের ঘটনা বিস্তারিত জানায় কিশোরী। কিন্তু সাহায্য করারপরিবর্তে ওই চালকও তাকে ধর্ষণ করে এবং উমারিয়া-কাটনি রোডের উপরেটোল প্লাজায় তাকে নামিয়ে চলে যায়। এর পর বাড়ি ফেরার জন্য আরও একটি ট্রাককে হাত দেখিয়ে থামায় কিশোরী। সেই ট্রাকের অজ্ঞাতনামা চালকও তাকে ধর্ষণ করে। অবশেষে ১৩ জানুয়ারি বাড়ি ফেরে বিধ্বস্ত কিশোরী। থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে সে অভিযোগ দায়ের করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ১১ জানুয়ারিথেকে নিখোঁজ হলেও ১২ জানুয়ারিতে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানায় কিশোরীর পরিবার। পুলিশ সুপারের কথায়, ‘গোটা পরিবার তীব্র ট্রমায় আক্রান্ত হয়ে রয়েছে। কিশোরীর বাবা-মা প্রবল ডিপ্রেশন ও শকে ভুগছেন। ’রবিবার পারশ সোনির ধাবা এবং অন্য দোকানগুলিতে তল্লাশি অভিযান চালায় পুলিশ। তবে এখনও পর্যন্ত দ্বিতীয় ট্রাকচালকের পরিচয় জানা যায়নি।