২০১৮ সালের মে'তে আত্মহত্যা করেছিলেন ৫৩ বছরের ইন্টিরিয়র ডিজাইনার অন্বয় নায়েক এবং তাঁর মা কুমুদ নায়েক। আলিবাগে কবীর গ্রামের বাড়ি থেকে তাঁদের দেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। সেই ঘটনায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন অন্বয়ের স্ত্রী অক্ষতা (৪৮)। তারইমধ্যে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তাতে অভিযোগ করা হয়েছিল, অর্ণব গোস্বামী, ফিরোজ শেখ এবং নীতেশ সারদার থেকে ৫.৪ কোটি টাকা পেতেন অন্বয়। কিন্তু তা দেওয়া হয়নি। সেজন্য আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছেন।রিপাবলিক টিভি শুরু হওয়ার প্রায় এক বছর পরে সেই ঘটনা ঘটেছিল। কনকোর্ডে ডিজাইন প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর ছিলেন অন্বয়। যে সংস্থার থেকে পরিষেবা নিত রিপাবলিক টিভি। অন্বয় ও তাঁর মা'র মৃত্যুর পর অর্ণব, ফিরোজ ও নীতিশের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার মামলা রুজু করেছিল পুলিশ।আইক্যাস্টএক্স টেকনোলজিস প্রাইভেট লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ফিরোজ। সারদা ছিলেন স্মার্ট ওয়ার্কের প্রতিষ্ঠাতা। আলিবাগ পুলিশের এফআইআরে অভিযোগ করা হয়েছিল, চার কোটি টাকা দেননি ফিরোজ। নীতিশের থেকে ৫৫ লাখ টাকা পেতেন অন্বয়। তাঁদেরও গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আর এআরজি আউটলায়ার মিডিয়া বকেয়া রেখেছিল ৮৩ লাখ। যে সংস্থার অধীনে আছে রিপাবলিক টিভি।তবে গত বছর সেই মামলা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছিল, যে তিনজনের নামে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে জোরালো কোনও প্রমাণ মেলেনি।আলিবাগ পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্তে গাফিলতির অভিযোগ তুলে মহারাষ্ট্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল দেশমুখের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অন্বয়ের মেয়ে আদনিয়া। তারপর চলতি বছরের মে'তে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, অন্বয় ও তাঁর মা'র মৃত্যুর ঘটনায় নতুন করে তদন্ত শুরু হবে।মহারাষ্ট্র প্রদেশ কংগ্রেসের তরফে অন্বয়ের স্ত্রী'র একটি ভিডিয়ো সামনে আনা হয়। সেই ভিডিয়োয় প্রয়াত ইন্টিরিয়র ডিজাইনারের স্ত্রী'কে অর্ণবের বিরুদ্ধে আঙুল তুলতে শোনা যায়। তারপর তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়।যদিও রিপাবলিক টিভির তরফে যাবতীয় অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। চ্যানেলের তরফে দাবি করা হয়েছিল, অন্বয়কে ৯০ শতাংশ টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বাকি হিসাব মিটমাটের জন্য ইন্টিরিয়র ডিজাইনারকে একাধিকবার চেষ্টা করা হয়েছিল। আর সেই সংক্রান্ত প্রমাণও আছে বলে দাবি করা হয়।তারইমধ্যে পালঘর হত্যা (গত এপ্রিল), সুশান্ত সিং রাজপুতের মৃত্যু (জুন) নিয়ে মুম্বই পুলিশের সমালোচনা করেছে রিপাবলিক টিভি। ভুয়ো টিআরপি মামলায়ও জড়িয়েছে রিপাবলিকের নাম। এমনকী রিপাবলিক টিভি সমস্ত সম্পাদকীয় কর্মীর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়।যে পুলিশ আধিকারিক সেই আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলার তদন্ত করেছিলেন, তাঁকে বুধবার গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশকে উদ্ধৃত করে সংবাদসংস্থা পিটিআই জানিয়েছে, তদন্তের মুখে পড়বেন ধৃত পুলিশকর্মী। যিনি তথ্যপ্রমাণের অভাবে তদন্ত বন্ধ করে দিয়েছিলেন।