উত্তর-পূর্ব ভারতের শান্তি সোমবার বিঘ্নিত হয় যখন দুই রাজ্যের সীমান্তে অসম এবং মিজো পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। ঘটনায় অন্তত পাঁচ পুলিশ কর্মীকে প্রাণও হারাতে হয়। রাজ্যে রাজ্যে এহেন সীমান্ত নিয়ে সংঘাতে স্তম্ভিত দেশ। তবে এরকম সংঘর্ষ উত্ত-পূর্বের ইতিহাসে প্রথম নয়। জঙ্গল, জমি, প্রাকৃতিক সম্পত্তি নিয়ে বিবাদ লেগেই থাকে রাজ্যগুলির মধ্যে। বিভিন্ন জনজাতির মধ্যে মাঝে মধ্যেই সংঘর্ষ বাঁধে সেখানে। রাজ্য রূপে যখন উত্তর-পূর্বের এলাকাকে ভাগ করা হয়েছিল, তখন থেকেই রাজ্যের সীমানা নিয়ে বিবাদ বজায় রয়েছে।স্বাধীনতার পর বহু বছর উত্তরপূর্বে মাত্র তিনটি রাজ্যে বিভক্ত ছিল - অসম, মণিপুর এবং ত্রিপুরা। পরবর্তীতে অসম ভেঙে মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড তৈরি হয়। এছাড়া নর্থ ইস্ট ফ্রন্টিয়ার এজেন্সি বদলে হয় অরুণাচলপ্রদেশ। নাগাল্যান্ড তৈরি হয় ১৯৬৩ সালে। মেঘালয় এবং মিজোরাম পৃথক রাজ্য হয় ১৯৭২ সালে। তবে রাজ্যের সীমানা নিয়ে বিবাদ থাকায় তা কোনও দিনই নির্দিষ্ট ভাবে বিভাজন করে দেওয়া হয়নি।অসম এবং মিজোরাম, এই দু'টি রাজ্যের মধ্যে ১৬৫ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এখানে দুই রাজ্যের আধিকারিক আর বাসিন্দাদের মধ্যে হিংসাত্মক ঘটনার খবর খুব স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। সোমবারের এই ঘটনার সূচনা হয়েছিল জুন মাসে। প্রতিবেশী রাজ্য তাদের জায়গা দখল করে নিচ্ছে এই অভিযোগে পাল্টা 'আইতলাং হনার' নামক একটি জায়গার নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করে অসম পুলিশ ৷ এ থেকেই ঝামেলার সূত্রপাত। তবে এই সীমান্ত বিতর্কের উৎস কিন্তু ব্রিটিশ সরকারের করে যাওয়া সীমান্ত সংক্রান্ত '১৮৭৫ নোটিফিকেশন'।এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে অসম সরকার জানিয়েছে, দুই-রাজ্যের মধ্যে থাকা চুক্তি আরেকবার লঙ্ঘন করেছে মিজোরাম ৷ তারা সীমান্তের স্থিতাবস্থা ভেঙে অসমের রেঙ্গতি বস্তি অঞ্চলের দিকে একটি রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করেছে। পাশাপাশি, মিজোরাম ওই এক জায়গায় সিআরপিএফ-এর ঘাঁটির কাছে নিজের সেনাবাহিনীর ক্যাম্প গড়েছে। সোমবার সকালে সমস্যার সমাধান করে ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অসম প্রশাসনের আধিকারিকের একটি বিশেষ দল ওই এলাকায় পৌঁছায়। মিজোরামকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার অনুরোধ জানায় তারা। এই বিশেষ দলে ছিলেন আইজিপি, ডিআইজি, কাশার জেলার ডিসি, ডিএফও ৷ দুঃখের বিষয়, মিজোরামের তরফে একদল উত্তেজিত জনতা তাঁদের ঘিরে ধরে ৷