দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনের সাড়ে তিনদিনের মাথায় ১০ লক্ষ পুণ্যার্থী ভিড় করেছিলেন। এখনও সেই ধারা অব্যাহত। পর্যটকরা যে পরিমাণে আসছেন তাতে পর্যটন এবং পরিবহণে লক্ষ্মীলাভ হয়েছে। রোজ সরকারি বাস এসবিএসটিসি’র শুধু দিঘা ডিপোর গড় আয় সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা দাঁড়িয়েছে। জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের আগে আয় ছিল সাড়ে চার লক্ষ টাকা। অর্থাৎ দৈনিক আয় একধাক্কায় এক লক্ষ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। দিঘাগামী এসবিএসটিসি’র বাসে মারাত্মক ভিড় বেড়েছে। তবে অন্যান্য ডিপোগুলিতেও রোজগার বেড়েছে।
এখন স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি পড়ে গিয়েছে। তাই মানুষজন জগন্নাথ মন্দির দেখতে পিল পিল করে দিঘায় ভিড় জমাচ্ছেন। সমুদ্রসৈকত এবং জগন্নাথধামের মিশেলে মেলে ধরেছেন নিজেদের। নতুন মিষ্টির দোকানগুলিতেও ভিড় বাড়ছে। নিউ দিঘা ও ওল্ড দিঘায় নানা দোকানপাঠ হয়েছে। সেখানে মহিলাদের ভিড় বাড়ছে। নানারকম খাবারও অনেক বেশি বিক্রি হচ্ছে। সরকারি বাসে করে পর্যটকরা বেশি আসছেন। আর ফেরার ক্ষেত্রেও বাসই ধরছেন। এই বিষয়ে এসবিএসটিসি’র দিঘা ডিপোর ইনচার্জ সোমনাথ ঘোষ বলেন, ‘দিঘা ডিপো থেকে জগন্নাথ মন্দির হওয়ার আগে সাড়ে চার লক্ষ টাকার টিকিট বিক্রি হতো। জগন্নাথ মন্দির উদ্বোধনের পর সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা হয়েছে। যা সত্যিই বড় কথা।’
আরও পড়ুন: ভারত–পাক যুদ্ধে উরিতে প্রাণ গেল এক মহিলার, কড়া জবাব দিল ভারতীয় সেনাবাহিনী
আগে দিঘাকে বলা হতো ‘গরিবের গোয়া’। আর এখন রাতারাতি তা পাল্টে গিয়ে বলা হচ্ছে, ‘জগন্নাথধাম দিঘা’। এই যে পরিবর্তন সেটা এখানে আসা পর্যটকরা বলতে শুরু করেছেন। কাতারে কাতারে মানুষজন জগন্নাথ মন্দির দর্শন করতে আসছেন। এখানে আসা পর্যটক চৈতালি সাহার বক্তব্য, ‘পুরীতে বহুবার গিয়েছি। দিঘাতেও বেশ কয়েকবার এসেছি। কিন্তু জগন্নাথ মন্দির হওয়ার পর আসিনি। তাই দেখতে এলাম। আমার সঙ্গে পরিবারের সদস্যরাও এসেছি। দারুণ আনন্দ হচ্ছে। খুব ভিড় হচ্ছে। ধর্মতলা থেকে বাস ধরেই এলাম। এভাবেই ফিরব।’
এখানে নিরাপত্তাও বেশ কড়া রাখা হয়েছে। সাড়ে তিনশো পুলিশ অফিসার, সিভিক ভলান্টিয়ার জগন্নাথ মন্দিরে ডিউটি করছেন। ভিড় থেকে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ সবই করা হচ্ছে। রোজ চারজন ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার থাকছেন। লেডি কনস্টেবলও রয়েছেন ভাল সংখ্যায়। বাসের সঙ্গে ট্রেনেও যাত্রী সংখ্যা বেড়েছে। এখন পাঁশকুড়া থেকে দিঘা একটি স্পেশাল ট্রেনও চলছে। এই বিষয়ে দিঘার স্টেশন ম্যানেজার সঞ্জীব মহাপাত্র বলেছেন, ‘আগের থেকে পর্যটক এবং আয় বেড়েছে।’ রোজ দিঘায় হাজার হাজার মানুষের ভিড় বাড়ছে। হোটেল থেকে পরিবহণ সব ক্ষেত্রেই আয় বাড়ছে।