অবিলম্বে যোগ্যদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে। আর টাকা দিয়ে চাকরি পাওয়া অযোগ্যদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তি দিতে হবে। যারা এই টাকা নিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করতে হবে। এই দাবিগুলি তুলে আজ, বৃহস্পতিবার ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটল সল্টলেকের বিকাশ ভবনে। আজ বিকাশ ভবন অভিযানে নামে চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষকদের অধিকার মঞ্চ। বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে প্রস্তুত ছিল কলকাতা পুলিশ। প্রস্তুত রাখা হয় কাঁদানে গ্যাসও। কিন্তু কলকাতা পুলিশের সব বাধা টপকে বিকাশ ভবনের ‘দখল’ নিলেন চাকরিহারারা। গেটে ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়লেন আর লোহার গেট একেবারে ভেঙে মাটিতে ফেলে এগিয়ে গেলেন চাকরিহারারা।
এদিকে আজ বেলা ১২টা থেকে বিকাশ ভবন ঘেরাও অভিযানের ডাক দেয় ‘যোগ্য শিক্ষক–শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের’ সদস্যরা। আর তাই বেলা বাড়তেই বিকাশ ভবনের সামনে জড়ো হন বিপুল পরিমাণ চাকরিহারা শিক্ষক–শিক্ষাকর্মী। তখনই উত্তেজনা বাড়তে থাকে। এই সম্মিলিত ফোর্স মূল ফটক ভেঙে ভিতরে ঢুকে পড়ে বলে অভিযোগ। এখানে প্রচুর পুলিশকর্মী মোতায়েন করা হলেও পরিস্থিতি সামাল দিতে গেলেই তুমুল বচসা এবং ধস্তাধস্তি শুরু হয়। চাকরিহারারা এই কাজ করেছেন বলে অভিযোগ। বহুদিন ধরে তাঁরা রাস্তায় বসে ছিলেন। শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে ছিলেন তাঁরা। এবার আবার বিকাশ ভবন অভিযানে নামেন চাকরিহারারা।
আরও পড়ুন: হাসিমারা বায়ুসেনা ছাউনি এলাকায় সন্দেহজনক ড্রোন, তল্লাশি করেও হদিশ পেল না পুলিশ
অন্যদিকে এসএসসি ২০১৬ প্যানেলের যোগ্য চাকরিহারাদের অভিযানের জেরে চাপে পড়ে যায় পুলিশ। পুলিশের পক্ষ থেকে বিকাশ ভবনের সামনে ব্যারিকেড তৈরি করা হয়। লোহার প্রধান ফটক লাগানো হয়। বাইরে তখন হাজার হাজার চাকরিহারা যোগ্য শিক্ষক–শিক্ষিকারা আওয়াজ তুলছেন। তাঁদের হাতের প্ল্যাকার্ডে লেখা, ‘চোরেদের বিচার চাই, আমাদের চাকরি ফেরত চাই।’ চাকরিহারারা বলেন, ‘অনেক আশ্বাস শুনেছি। আর নয়। অবিলম্বে যোগ্যদের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে হবে। শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে দিতে হবে।’ ব্যারিকেড ভেঙে চাকরিহারারা পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি শুরু করেন। বিকাশভবনের গেট ভেঙে ফেলে ভিতরে ঢুকে পড়েন চাকরিহারারা। তখন উত্তেজনা তৈরি হয়।
এছাড়া এই পরিস্থিতিতে ঘটনাস্থলে আনা হয় বিশাল পুলিশ বাহিনী। আধ ঘণ্টা পর পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে এলেও এখনও উত্তেজনা রয়েছে। এসএসসি’র চাকরিহারা গ্রুপ–সি, গ্রুপ–ডি শিক্ষাকর্মীদের মাসিক ভাতা নিয়ে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন পাশও হয়। তারপরই নবান্নের সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী জানান, মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত গ্রুপ–সি কর্মীদের মাসিক ২৫ হাজার টাকা এবং গ্রুপ–ডি কর্মীদের মাসে ২০ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে। যোগ্য শিক্ষক–শিক্ষিকা অধিকার মঞ্চের আহ্বায়ক মেহেবুব মণ্ডলের কথায়, ‘আমরা আন্দোলনে এতদিন পর্যন্ত স্বাধীনতা দিয়েছি। এবার আমাদের সসম্মানে চাকরি ফিরিয়ে দিতে হবে সরকারকে। সিবিআই তদন্ত করল, অথচ সেই রিপোর্টকে মান্যতা দিল না আদালত।’