বাংলা মেগা-প্রেমিদের ঘরের ছেলে ‘গোবিন্দ’ এখন বি-টাউনের নায়ক। ধারাবাহিক থেকে কাজ শুরু করলেও নানা সময় নন ফিকশন থ𝔉েকে বড় পর্দা ওܫ ওয়েব সিরিজে নজর কেড়েছেন রোহন। আর এই প্রেম দিবসে তিনি তাঁর নতুন সিরিজ ‘বিষহরি’ নিয়ে ফিরছেন। তবে খবর এই সিরিজের সেটে বিষাক্ত সাপকে দেখে মায়ায় পড়ে গিয়েছিলেন নায়ক! 'বিষহরি’র নানা অভিজ্ঞতা থেকে শুরু করে ব্যক্তিগত জীবন, টলি-পাড়ায় থেকে মায়ানগীর মুম্বইয়ের সফরটা ঠিক কেমন ছিল? সবটা নিয়েই হিন্দুস্থান টাইমস বাংলার সঙ্গে খোলামেলা আড্ডায় ধরা দিলেন রোহন ভট্টাচার্য।
‘বিষহরি’-এর ট্রেলারে আপনাকে তো একদম অন্যরকম ভাবে পেলাম, দর্শকদের থেকে কেমন সাড়া পাচ্ছেন?
রোহন: হ্যাঁ, 'বিষহরি'-র ট্রেলার তো সকলের বেশ পছন্দ হয়েছে। আমাকে অনেকেই ফোন করে জানিয়েছেন। আমার কাছের মাಌনুষেরা, বন্ধুরা, আমার পরিবার সকলেই ভীষণ খুশি ট্রেলার দেখে, ওঁদেরও খুব ভালো লেগেছে। আর সত্যি বলতে আমারও বেশ ভালো লাগছে এত সুন্দর একটা প্রোজেক্টের অংশ হতে পেরে।
হ্যাঁ, আর আপনার চরিত্রটাও বেশ অন্যরকম, পুরো সিরিজ জুড়ে এত উত্তেজনা, সেখানে 'তথাগত' যেন স্বস্তির হাওয়া…
রোহন: একেবারেই, এটা তো মূলত একটা থ্রিলার সিরিজ, এখানে অনেক ওঠাপড়া, ভয়, সাসপেন্স আছে। তবে 'বিষহরি'তে আমার চরিত্র ‘তথাগত’ এই সবটার মধ্যে একটা রিলিফ বলতে পারেন। তথাগত আর ওঁর স্ত্রী ‘রাඣজি’র মধ্যে যে প্রেমটা দেখানো হয়েছে সেটাও খুব রিলেটেবল। বর্তমান সময়ে যেরকম 'জেন জি' প্রেম হয় তেমনটা। ওরা একে অপরকে ‘তুই’ বলে সম্বোধন করে ঠিকই, কিন্তু তা বলে দু'জনের প্রতি দু'জনের সম্মানের শ্রদ্ধার, বোঝাপড়ার কোনও খামতি নেই। ওঁরা একে অপরক💛ে চোখে হারায়। আসলে সবটা মিলিয়ে আমার চরিত্র ‘তথাগত’ আর আমাদের সিরিজ ‘বিষহরি’ অনেকটা অন্যরকমের।
আরও পড়ুন: 'আমি যে সব পরিস্থিতির মু🍨খোমুখি হয়েছি, নতুনদের সঙ্গে যেন তেমনটা না ঘটে', অকপট সৌরভ
তবে ‘বিষহরি’-এর সঙ্গে মনসামঙ্গলের তো একটা সুক্ষ্ম যোগ রয়েছে…
রোহন: তা রয়েছে বটে। তবে এটা তো একটা থ্রিলার সিরিজ꧃, মিল বলতে কেবল বেহুলা যেরকম তাঁর স্বামী লখিন্দরকে রক্ষা করতে চেয়েছিলেন, এখানেও শোলাঙ্কির (শোলাঙ্কি রায়) চরিত্র ‘রাজি’ তাঁর স্বামী ‘তথাগত’কে বাঁচাতে চায়, আর একটা মিল হল সাপ।
হ্যাঁ, ট্রেলারেও তো সাপের ঝলক দেখলাম, শুনছিলাম সেটে নাকি সত্যিকার সাপও আনা হয়েছিল, ভয় পান সাপে?
রোহন: হ্যাঁ, যে কোনও আনপ্রেডিক্টেবল জিনিসকেই আমি ভয় পাই। সাপে আমার সত্যিই একটু ভয় আছে। আসলে সরীসৃপ জাতীয় প্রানী দেখলে ঠিক ভয় বলব না, তবে কেমন যেন একটা অদ্ভুত রকমের গা শিরশিরে অনুভূতি হয়। তবে আমাদের সেটে আনা সাপটাকে মোটেও ভয় পাইনি, উল্টে ওর জন্য ভয় হচ্ছিল। একটা নিরীহ প্রানী, আমারা সেটে প্রায় ৭০-৮০ জন মানুষ, যদি ভ𓄧ুলবশত ওর কোনও ক্ষতি হয়ে যায়, সেটা ভেবে ভয় পাচ্ছিলাম। তবে ওর সঙ্গে ♋ওর মালিক ছিলেন। একদিন মাত্র ওকে নিয়ে শ্যুট হয়েছে, তাও খুব অল্প সময়ের জন্য। সেই সময়টা ওর মালিক ওকে সুন্দর করে সামলে রেখেছিলেন।
তবে এবার তো কেবল ‘বিষহরি’ নয়, শুনলাম বলিউডেও আপনার নতুন কাজ আসছে…
রোহন: হ্যাঁ।
আরও পড়ুন: প্রেমদিবসে বরের থেকে আলাদা! স🅰ৌরভ নয়,'প্রথম ভ্যালেন্টাইন'-এর সঙ্গে কাটবে দর্শনার ১৪ই ফেব্রুয়ারি
সুযোগটা এল কী ভাবে? অনেক দিন ধরেই চেষ্টা করছিলেন?
রোহন: না, তেমনটা নয়। হঠাৎ করেই সুযোগ আসে, খুব কাকতালীয় ভাবে। আসলে এই ছবিটা আমার করার কথাও ছিল না। আমি যে চরিত্রটা করেছি সেই চরিত্রটা বাবিল খানের (ইরফান খানের পুত্র) করার কথা ছিল। নির্মাতারা নভেম্বরের মধ্যে আমাদের ছবিটার শ্যুটিং শেষ করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তখন বাবিলের অন্য একটি ছবির শ্যুটিং চলছিল। সেই সময় তিনি জানান যে, ত൩িনি ওই মুহূর্তেই ছবিটা করতে পারবেন না। বাবিল মার্চ মাসের আগে এই ছবিটির কাজ শুরু করতে পারবেন না বলে জানান। বাবিলকে যেহেতু পাওয়া গেল না, তখন পরিচালক মনে করেন যে, এটা যেহেতু একজন বাঙালি বীরের আত্মজীবনীমূলক ছবি, তাই বাংলা থেকেই একজন অভিনেতাকে নেওয়া যায়। কারণ বাকি সকলকে তো বলিউড থেকেই নেওয়া হয়েছে। তারপর ওঁরা খোঁজ শুরু করেন, আর যাঁর জীবনী নিয়ে এই ছবি তাঁর সঙ্গে আমার মুখের খানিকটা মিল থাকায় ওঁরা আমাকে কাস্ট করেন।
ছবিতে নীরজ কবি, দিব্যা দত্তের সঙ্গে কাজ করলেন, কেমন ছিল অভিজ্ঞতা?
রোহন: ওঁরা এক এক একজন দিকপাল অভিনেতা। ওঁদের থেকে সকলে অভিনয় শেখেন, তাঁদের সঙ্গে সারাদিন এক সেটে অভিনয় করার অ༺ভিজ্ঞতা যে দারুণ হবে তা তো বলাই বাহুল্য। এই ছবির সেটটা আমার জন্য পুরোটা একটা ইনস্টিটিউশনের মতো ছিল।
অনেক কিছু শেখাও তো হল তার মানে…
রোহন: হ্যাঁ একদমই, প্রথম যে দিন আমার নীরজ কবি স্যারের সঙ্গে শ্যুটিং ছিল সেদিন আমাদের পরিচালক ওঁর সঙ্গে প্রথমে আলাপ করিয়ে দেন আমাকে। স্যার আমার থেকে জানতে চান যে, ‘তুমি কীভাবে তৈরি হয়েছ চরিত্রটার জন্য?’ আমি তো প্রথম দিকে একটু ঘাবড়ে যাই কারণ ওঁর সামনে কীভাবে বলব! তিনি তো সকলকে শেখান, ভিকি কৌশল, হৃতিক রোশনের মতো অভিনেতারা ওঁর কাছে ওয়ার্ဣকশপ করেছেন। আর সেখানে তিনি আমার থেকে জানতে চাইছেন! যাইহোক তারপর সবটা বলি নিজের মতো করে। পাশাপাশি তিনি কোনও চরিত্রের জন্য নিজেকে কীভাবে প্রস্তুত করেন তাও জানতে চাই। তিনি আমাকে নানা টিপস দেন। এই ছবির সেটটা আমার জন্য পুরোটা একটা ইনস্টিটিউশনের মতো ছিল। দিব্যা দত্তের থেকেও অনেক কিছু শিখেছি।
তবে অনেকের কাছেই বলিউডে কাজ মানে কেরিয়ারে উত্তরণ, আপনার কী মত?
রোহন: মুম্বইতে কাজ মানে একটু অন্যরকম অভিজ্ঞতা তো বটেই। কারণ ওখানে আরও বড় স্কেলে কাজটা করা হয়। ওঁদের বাজেটও অনেকটা বেশি থাকে। তবে এর জন্য কেরিয়ারে উত্তরণ হল কিনা তার উত্তর আমি সত্যিই জানিনা। একটা ভালো কাজ করেছি। আমার মনে হয় যে কোনও জায়গাতেই ভালো কাজ করতে পারলে সেটা অবশ্যই একজন অভিনেতাকে আরও সমৃদ্ধ করে। তবে যদি এই কাজটা দর্শকদের ভালো লাগে তাহলে, আমি যে আরও একধাপ এগিয়ে যাব আমার কেরিয়ারে তা বলতে পারি। কাজের ক্ষেত্রে আমি মুম্বই বা কলকাতা বলে আলাদা করে কিছু ভাবি না। শুধু ভালো করে কাজ করার চেষ্টা করি। এই ছবিতে এত বড় মাপের সব অভিনেতারা ছিলেন, তাছাড়া টিমটা ছিল লাপাতা লেডিজের টিম, কিন্তু সবাই এতটাই ভালো যে কখনও বুঝতে দেননি যে এত বড় একটা টিমের সঙ্গে কাজ করছি। আর আমিও কখনꦏও ঘাবড়ে যাইনি।পরিচালকও সেটা বলেছিলেন।
কিন্তু মেগা থেকে বলিউডে ছবি, জার্নিটা তো খুব একটা সহজ নয়, শুরুতে তো অনেকটা স্ট্রাগল ছিল…
রোহন: সেটা তো সবারই থাকে। তবে ওটাকে আমি স্ট্রাগল বলবো না, ওটা আমার কাছে শেখার সময়। তখনও চেষ্টা করছিলাম, এখনও চেষ্টা করছি। আমি খুব ভাগ্যবান যে ‘ভজ গোবিন্দ’র মতন একটা মেগা দিয়ে আমার ক্যারিয়ার শুরু করতে পেরেছিলাম। এখনও দর্শকরা আমার সেই চরিত্রটা মনে রেখেছেন। একজন অভিনেতা তো সব সময়ই চেষ্টা করেন বেশি সংখ্যক দর্শকের কাছে নিজেকে পৌঁছে দিতে। আমিও সেটা করি। তা𝔍ই নিজের উপর অনেক কাজ করেছি। এখনও আমার প্রচুর ไকাজ করা বাকি। সেটার জন্য আমি প্রতিদিন, প্রতিমুহূর্তে নিজেকে তৈরি করে চলেছি।
কিন্তু সেই সময় রিজেকশনের মুখোমুখি তো নিশ্চয়ই হয়েছেন?
রোহন: সেটা তো এসেছে অবশ্▨যই। তবে এটা সবার ক্ষেত্রেই আসে।
কিন্তু তাঁদের সঙ্গে কি এখন যোগাযোগ রয়েছে?
রোহন: শুধু যোগাযোগ আছে বললে ভুল বলা হবে তাঁদের সঙ্গে কাজও করেছি। আসলে রিজেকশন খুব কমই এসেছে আমার জীবনে। নিজেকে অনেকটা প্রস্তুত করে তবে ইন্ড্রাস্টিতে পা রেখেছিলাম। একটা জায়গা পর্যন্ত যদি কেউ যদি নিজেকে তৈ🍬রি করেন, তারপর আমার মনে হয় না যে, তাঁকে খুব বেশি রিজেকশনের মুখোমুখি হতে হয়। আমার ক্ষেত্রে যেটা হয়েছে সেটা হল, হয়তো সেই চরিত্রটার সঙ্গে আমি যাচ্ছি না বলে আমাকে নেওয়া হয়নি। কিন্তু আমি কাজটা পারবো না বলে আমাকে নেওয়া হ𒁏চ্ছে না তা কিন্তু কখনও হয়নি। আর সেই জন্যই আমার সঙ্গে সকলের সুসম্পর্ক বজায় রয়েছে।
তবে মেগার পর সোজা মুম্বই, মাঝে খুব বেশি বাংলা ছবিতে এখনও আপনাকে সে ভাবে পাওয়া গেল না কেন?
রোহন: এটা তো বাংলায় আমাদের যাঁরা কাজ দেন তাঁরাই ভালো বলতে পারবেন। তবে বাংলা ছবিতেও কাজ শুরু হয়েছে, কিছুদিনের মধ্যেই একটা ছবি মুক্তি পাবে। তাছাড়া꧑ অন্যান্য কিছু কাজের কথাও হচ্ছে। তবে সব কিছুর একটা নির্দিষ্ট সময় থাকে বলে আমি মনে করি। যখন যেটার সময় আসবে ঠিক হবে।
তবে সামনেই ১৪ ফেব্রুয়ারি, ওই দিন 'বিষহরি' মুক্তি পাচ্ছে, আবার ওই দিনই ভালেন্টাইন'স ডে, এবার নতুন প্রেম, অঙ্গনার সঙ্গে কি কোনও পরিকল্পনা রয়েছে?
রোহন: অঙ্গনা এবং আমি দু'জনেরই ওই দিন কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকব। পুরো দিনটাই কাজের মধ্যে কাটবে। ১৪ তারিখ 'বিষহরি' আসছে, ফলে সেটা অনেক বড় একটা দায়িত্ব। সিরিজটা প্রোমোট ক🔯রব, তাছাড়া শ্যুটিংও আছে, সেই দিনটা প্রেম করে কাটিয়ে দেওয়াটা মন꧙ে হয় না আমার জন্য খুব একটা ঠিক হবে। তাছাড়া আবার ১৫ তারিখ আমার শ্যুটিং আছে। সেদিন আবার সকাল ছটা থেকে কল টাইম। তার জন্য আগের দিন রাত্রেও তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়তে হবে। কাজের মধ্যেই কেটে যাবে দিনটা।
প্রথম প্রেমদিবসেই একসঙ্গে থাকা হবে না, তাহলে দু'জনের মধ্যে তো নিশ্চয়ই অনেকখানি বোঝাপড়া রয়েছে…
রোহন: হ্যাঁ সেটা তো থাকতেই হবে। এই আন্ডারস্ট্যান্ডিংটা 𒊎সবার মধ্যে থাকা দরকার।
প্রেমিকার হিসেবে অঙ্গনা কেমন?
রোহন: প্রেমটা করি আগে ভ🍸ালো ভাবে, তারপরে একদিন বলব। তবে আꦚমরা ভালো বন্ধু।
এখন তো বললেন পুরো দিন কাজের মধ্যে কাটবে, কিন্তু স্কুল কলেজের সময় তো ভ্যালেন্টাইন'স ডে নিয়ে একটা আলাদা উন্মাদনা থাকত…
রোহন: না, আমার জন্য ভཧ্যালেন্টাইন'স ডে আলাদা কিছু নয়। ভা🍨লোবাসার কোনও বিশেষ দিন হয় না। ভালোবাসা সব সময় রোজ মনের মধ্যে থাকা উচিত।
আর প্রেমপত্র…
রোহন: (হেসে) প্রচুর প্রেমপত্র পেয়ে𝔍ছি, তবে আমি কিন্তু কাউকে প্রেমপত্র দেইনি। কারণ আমি ভীষণ কুঁড়ে এইসব ব্যাপ💃ারে, এত কিছু লেখা আমার দ্বারা ঠিক হবে না।
কিন্তু সেই প্রেমপত্রের জন্য বাড়িতে ধরা পড়ে গিয়ে কি কখনও বকা খেয়েছেন ?
রোহন: (অনেকটা ✨হেসে) হ্যাঁ, ধরা পড়েছি, তবে বকা খাইনি। বাড়িতে একবার আমার বাপি দেখে নিয়েছিলেন। মা কে সেটা দেখিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন যে এটা কী? বিষয়টাকে ঢাকা দেওয়ার জন্য একটু বানিয়ে আমি বলি যে, এটা কোনও প্রেমপত্র নয়, আমি একটা গান লিখছি, এগুলো গানের কথা, এতে সুর বসিয়ে দিলেই গান হয়ে যাবে। এই কথাটা শুনে বাবা রেগে যাওয়ার বদলে বেশ খুশি হয়ে গিয়েছিল, বলেছিলেন, ‘বাহ ছেলে তো বেশ ক্রিয়েটিভ।’