বাংলার 'কিংবদন্তি' পরিচালকদের কথা উঠলেই সত্যজিৎ রায়, ঋত্বিক ঘটকের সঙ্গে যে নামটি উচ্চারিত হয় তিনি হলেন মৃণাল সেন। আজ সেই কিংবদন্তির আরও একটা জন্মবার্ষিকী। বেঁচে থাকলে ২০২৫-এর ১৪ মে তাঁর বয়স হত ১০২ বছর। এই মৃণাল সেনের হাত ধরে যে দুই খ্যাতনামা শিল্পীর অভিনয়ে হাতেখড়ি হয় তাঁদের একজন হলেন মিঠুুন চক্রবর্তী, অন্যজন মমতা শঙ্কর। আর তাঁরা দুজনেই মৃণাল সেনের 'মৃগয়া' ছবির হাত ধরে ডেবিউ করেছিলেন।
মিঠুন চক্রবর্তী ও মমতা শঙ্কর, তাঁদের দুজনের কথাতেই অসংখ্যবার উঠে এসেছে মৃণাল সেনের কথা। যখনই তাঁরা পরিচালককে নিয়ে কথা বলেছেন আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছেন।
২০২৩ সালে 'পালান' ছবি নিয়ে কথা বলার সময় Hindustan Times Bangla-কে মমতা শঙ্কর জানিয়েছিলেন কিংবদন্তি মৃণাল সেনের হাত ধরে তাঁর ডেবিউ-এর কথা। তিনি বলেন, ‘মৃগয়া না হলে হয়ত আপনারা আমায় অভিনেত্রী হিসাবে ডাকতেন না। মৃণালদা মাকে (অমলাশঙ্কর) সবসময় বলতেন, কেন আপনার মেয়ে অভিনয় করছে না? মা বলেছিলেন, ও স্কুলটা শেষ করুক, পড়শোনাটা শেষ করে না হয় করবে। মৃণালদা আমায় বলেছিলেন, তুমি কখনও অভিনয় করতে চাইলে আমায় প্রথম খবর দেবে। আমিও ওঁকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম। আর মাও মৃণালদাকে বলেছিলেন, ও ছবি করলে আপনার ছবিতেই প্রথম কাজ করবে। তখন আমার কত বয়স হবে ১৯ বছর…।’

মৃগয়া ছবিতে ‘ডুঙ্গরি’র চরিত্রে দেখা মিলেছিল মমতা শঙ্করের। পরবর্তী সময়ে মৃণাল সেনের 'খারিজ' ছবিতে অভিনয় করেন মমতা শঙ্কর। যে 'খারিজ'-এর চরিত্রগুলিই আরও একবার ২০২৩-এ ফিরে এসেছিল কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘পালান’-এর হাত ধরে। আর তাই কথা বলতে গিয়ে স্বাভাবিকভাবেই এসে পড়ে মৃণাল সেনের 'খারিজ'-এ তাঁর কাজ করার কথা।
ছবির শ্যুটিং-এর পুরনো স্মৃতিতে ফিরে গিয়ে মমতা শঙ্কর বলেছিলেন, ‘খারিজ-এর দৃশ্যে পালান যখন মারা গিয়েছিল, তখন ওর বাবা এসেছিল মাইনে নিতে। আর আমি প্রশ্ন করছিলাম, পালান-এর বাবাকে আমি কী বলব? সেটা বলে আমি কেঁদে ফেলি, আর আমি সত্যিই কেঁদে ফেলেছিলাম। কান্না থামছিল না। মৃণালদা তখন আমায় এসে জড়িয়ে ধরেছিলেন, ভীষণ খুশি হয়েছিলেন। আমি সত্যিই কান্না থামাতে পারছিলাম না। মৃণালদার থেকে সেই প্রশংসা আমার কাছে একটা বড় প্রাপ্তি ছিল।’