কন্নড় সম্প্রদায়কে অপমান করার অভিযোগে গায়ক সোনু নিগমকে স্বস্তি দিল কর্নাটক হাইকোর্ট। তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও দমনমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তবে তদন্তে সহযোগিতা করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। সোনু নিগম তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা ফৌজদারি মামলা খারিজ করার জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন। গত মাসে একটি মিউজিক কনসার্টের সময় আগত দর্শকদের সঙ্গে বচসার পর, কিছু বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন সোনু। এরপর গায়কের নামে অভিযোগের ভিত্তিতে বেঙ্গালুরু পুলিশ ৩৫১ (২) (অপরাধমূলক ভীতি প্রদর্শন), ৩৫২ (১) (শান্তিভঙ্গের উদ্দেশ্যে অপমান) এবং ৩৫৩ (জনসাধারণের মধ্যে বিশৃঙ্খলা উস্কে দেওয়ার মতো বিবৃতি) ধারায় অভিযোগ দায়ের কর হয়।
বৃহস্পতিবার বিচারপতি শিবশঙ্কর অমরনওয়ারের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানিয়েছে, রাজ্য সরকারের তরফে আদালতকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, তদন্তে সহযোগিতা করলে তাঁর বিরুদ্ধে কোনও দমনমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না।
কর্ণাটক রক্ষনা বেদিকের সভাপতি ধর্মরাজ অনন্তিয়া তাঁর অভিযোগে বলেছিলেন যে, সোনু নিগম কেবল কন্নড় ভাষাভাষির মানুষকেই অপমান করেননি, তাদের সাংস্কৃতিক গর্ব এবং ভাষাগত পরিচয় নিয়ে অসহিষ্ণুতার প্রকাশ করেছেন। শুনানি চলাকালীন, গায়কের আইনজীবী জনসাধারণের ক্ষমা প্রার্থনার উদ্ধৃতি দিয়েছিলেন, যখন সরকার যুক্তি দিয়েছিল যে মন্তব্যগুলি সরাসরি সম্প্রচারের সময় করা হয়েছিল এবং আইনি পদক্ষেপ যথাযথ ছিল।
এই মামলায় সোনু আত্মপক্ষ সমর্থনে স্পষ্ট করেন যে, চার-পাঁচজন গুন্ডাজাতীয় মানুষ ছিল, যারা জোরে 'কন্নড়-কন্নড়' স্লোগান দিয়ে যাচ্ছিল। কিছু মেয়ে তাদের বোঝাচ্ছিল যে, এটা করো না, পরিবেশ খারাপ হচ্ছে। তিনি শুধু ওই চার-পাঁচজনকে বলতে চেয়েছিলেন যে, যখন পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদীরা হামলা হয়, তখন ওরা কাউকে জিজ্ঞাসা করেনি যে, কে কোন ভাষায় কথা বলে।
কী ছিল ঘটনা?
গত ২৫ এপ্রিল বেঙ্গালুরুর একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে এক গানের কনসার্ট চলাকালীন এই ঘটনা ঘটে। কনসার্ট চলাকালীন দর্শকরা সোনুকে কন্নড় ভাষায় গান গাওয়ার দাবি জানান। গায়ক এই অনুরোধে আপত্তি জানিয়ে পহেলগাঁওয়ে জঙ্গি হামলার প্রসঙ্গ টেনে বলে ওঠেন, ‘কন্নড়, কন্নড়, কন্নড়। এই কারণেই আসলে পহেলগাঁওয়ের ঘটনা ঘটেছে।’
এই মন্তব্যটি সোশ্যাল মিডিয়ায় হইচই ফেলে দেয় এবং কর্ণাটক ফিল্ম চেম্বার অফ কমার্স সোনুকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। যদিও বিতর্ক বাড়তেই ক্ষমা চেয়ে নেন সোনু।