মণিপুর হিংসার ঘটনায় সম্প্রতি অসম রাইফেলসের বিরুদ্ধেই এফআইআর করেছে সেরাজ্যের পুলিশ। অভিযোগ, তারা মণিপুর পুলিশকে দায়িত্ব পালনে বাধা দিয়েছে এবং কুকি জঙ্গিদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে। এই আবহে বাহিনীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করা হয়েছে। অসম রাইফ🍰েলসের নবম ব্যাটেলিয়নের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ দায়ের করেছে। আর এবার এই নিয়ে মুখ খুলল ভারতীয় সেনা। মঙ্গলবার সেনাবাহিনী বলেছে, অসম রাইফেলসের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থেকে মণিপুরে শান্তি ফেরানোর কাজ চালিয়ে যাবে সেনা। অসম রাইফেলস ও সেনাবাহিনী যৌথ উদ্যোগে মণিপুরের অশান্তি প্রতিরোধে পদক্ষেপ করে চলেছে। মণিপুরে সহিংসতা বাড়িয়ে তুলতে পারে এমন কোনও প্রচেষ্টাকে প্রতিরোধ করতে পদক্ষেপ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকবে তারা। পাশাপাশি সেনার বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, অসম রাইফেলস মানুষকে বাঁচানোর জন্য কাজ করছে মণিপুরে। সেনার অভিযোগ, অসম রাইফেলসকে বদনাম করার অপপ্রচেষ্টা চলছে। বাহিনীর দাবি, মৈতৈ এবং কুকি অধ্যুষিত অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি ‘বাফার জোন’-এ ছিল অসম রাইফেলসের সাঁজোয়া যান। সেই বাফার জোন পার করতে দেওয়া হয়নি পুলিশকে। নয়ত হিংসা আরও ছড়িয়ে পড়ত।
উল্লেখ্য, গত ৩ মে থেকে জাতিগত হিংসার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি অবস্থা। এখনও পর্যন্ত কয়েক হাজার জনকে উদ্ধার করে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। চূড়াচাঁদপুর, মোরে, কাকচিং এবং কাংপোকপি জেলা থেকে অধিকাংশ মানুষকে সরানো হয়েছে। এরই মধ্যে হিংসায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। অভিযোগ উঠেছে কুকি ‘জঙ্গিরা’ অটোমেটিক রাইফেল নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই আবহে কুকি জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে সেই রাজ্যে। এরই মাঝে গত জুলাই মাসে ভাইরাল হয়েছিল মণিপুর বিভীষিকার এক অকল্পনীয় ভিডিয়ো। দেখা গিয়েছিল, দুই মহিলাকে নগ্ন করিয়ে ঘোরানো হচ্ছে রাস্তায়। পরে তাঁদের মাঠে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। অভিযোগ, তাঁদের গণধর্ষণ করা হয়েছিল। সেই ঘটনা ঘটেছিল গত ৪ মে। ঘটনার ৭৭ দিন পর পরশু এই মাম🐠লায় প্রথম গ্রেফতারি হয়। আর সেই একই দিনে, অর্থাৎ, ৪ মে মণিপুরের রাজধানীত🐓ে দুই যুবতীকে গণধর্ষণ করে খুন করা হয় বলে অভিযোগ। সেই মামলায় প্রায় ৮০ দিন পরে গিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছিল কয়েকজন অভিযুক্তকে।
প্রসঙ্গত, ইম্ফল উপত্♛যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হল মৈতৈ জনজাতি। তবে তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছে যে তাদের তফসিলি উপজাতির তকমা দিতে হবে। তাদের এই দাবির বিরোধ জানিয়েছে স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসীরা। এই আবহে গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে মণিপুরের অল ট্রাইবাল স্টুডেন্ট ইউনিয়ন একটি মিছিলের আয়োজন করেছিল। সেই মিছিল ঘিরেই হিংসা ছড়িয়ে পড়ে চূড়াচাঁদপুর জেলায়। এদিকে তফশিলি উপজাতির ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং সার্ভে নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছে। এই আবহে গত এপ্রিল মাসে এই চূড়াচাঁদপুর জেলাতেই মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের সভাস্থলে আগুন লাগিয়ে দিয়েছিল ইন্ডিজেনাস ট্রাইবাল লিডারস ফোরামের সদস্যরা। এদিকে এই জেলা থেকে আদিবাসী বনাম মৈতৈদের এই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে অন্যান্য জেলাতেও। আর এখনও পর্যন্ত সেই হিংসা প্রাণ হারিয়েছেন ১৫০ জনেরও বেশি মানুষ।