সম্প্রতি পাকিস্তানকে নাস্তানাবুদ করে ছেড়েছে ভারতের সুদর্শন চক্র। এবার সংঘর্ষের আবহে ইসলামাবাদকে চোখ রাঙিয়ে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি ক্ষেপণাস্ত্র ‘ভার্গবাস্ত্র’-এর সফল পরীক্ষা করল ভারত। এই ক্ষেপণাস্ত্রগুলি ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করবে বলে মনে করা হচ্ছে। সোলার ডিফেন্স অ্যান্ড অ্য়ারোস্পেস লিমিটেডের তৈরি এই কাউন্টার ড্রোন সিস্টেম ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসা ড্রোনকে ধ্বংস করবে এক নিমেষে।
মঙ্গলবার ওড়িশার গোপালপুর উপকূলে দেশীয় ‘মাইক্রো মিসাইল’গুলি তিনবার ট্রায়াল হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন আর্মি এয়ার ডিফেন্সের শীর্ষ আধিকারিকরাও। প্রথম দুটি ট্রায়ালে একটি করে রকেট পরীক্ষা করা হয়। শেষ ট্রায়ালে মাত্র দুই সেকেন্ডের ব্যবধানে পরপর দুটি রকেট ছোড়া হয়। প্রতিটি রকেটই ড্রোন ধ্বংস করতে সফল হয়।সব মিলিয়ে চারটি রকেটই প্রত্যাশিতভাবে কাজ করেছে এবং প্রয়োজনীয় লঞ্চ প্যারামিটার অর্জন করেছে, যা বড় আকারের ড্রোন আক্রমণ প্রতিরোধে এর অগ্রগামী প্রযুক্তির প্রমাণ দেয়। ‘ভার্গবাস্ত্র’ ড্রোনবিহীন আকাশযান (ইউএভি) হুমকির বিরুদ্ধে একটি একীভূত সমাধান হিসেবে কাজ করে।
‘ভার্গবাস্ত্র’-র বিশেষত্ব
এটি ২.৫ কিলোমিটার দূরত্বে ছোট আকারের আগত ড্রোন সনাক্ত ও ধ্বংস করার উন্নত ক্ষমতা প্রদর্শন করে। এই সিস্টেমের প্রথম স্তরে ব্যবহৃত হয় অগাইডেড মাইক্রো রকেট, যা ২০ মিটারের প্রাণঘাতী ব্যাসার্ধের মাধ্যমে ড্রোন সোয়ার্ম নির্মূল করতে সক্ষম। এটির দ্বিতীয় স্তরে রয়েছে গাইডেড মাইক্রো-মিসাইল, যা পূর্বে পরীক্ষিত হয়েছে এবং নির্ভুল নির্মূল নিশ্চিত করে। ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর অনন্য অপারেশনাল চাহিদা পূরণের জন্য এই সিস্টেমটি বিভিন্ন ভূখণ্ডে, বিশেষ করে সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৫,০০০ মিটারের বেশি উচ্চতায় কার্যকরভাবে কাজ করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।মেক ইন ইন্ডিয়াএটি মেক ইন ইন্ডিয়া মিশনের জন্য আরেকটি গর্বের মুহূর্ত এবং ভারতের ইতিমধ্যে শক্তিশালী এয়ার ডিফেন্স ছাতার আরও উন্নতির একটি প্রগতিশীল পদক্ষেপ। এই সফল পরীক্ষা ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের প্রেক্ষাপটে বিশেষ তাৎপর্য বহন করে, যেখানে পাকিস্তান গত সপ্তাহে ভারতীয় শহরগুলিতে ড্রোন আক্রমণের চেষ্টা করেছিল।এই সিস্টেমটি ভারতের সশস্ত্র বাহিনীর নেটওয়ার্ক-সেন্ট্রিক যুদ্ধের পরিকাঠামোর সঙ্গে নির্বিঘ্নে একীভূত হওয়ার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে, যা এটিকে আধুনিক যুদ্ধের জন্য আরও কার্যকর করে তোলে।
শনাক্ত সক্ষমতা
এটির রাডার ৬ থেকে ১০ কিলোমিটার দূরত্বে ক্ষুদ্র আকাশযান সনাক্ত করতে সক্ষম। ইলেক্ট্রো-অপটিকাল/ইনফ্রারেড (ইও/আইআর) সেন্সর স্যুট কম রাডার ক্রস-সেকশন (এলআরসিএস) লক্ষ্যগুলির সুনির্দিষ্ট সনাক্তকরণ নিশ্চিত করে। এই সিস্টেমটি অপারেটরদের একটি ব্যাপক পরিস্থিতিগত সচেতনতা প্রদান করে, যার মাধ্যমে তারা একক ড্রোন বা পুরো সোয়ার্মের বিরুদ্ধে মূল্যায়ন ও প্রতিক্রিয়া জানাতে পারে।
‘ভার্গবাস্ত্র’-র কার্যকারিতা
এটি স্তরবিশিষ্ট এবং দীর্ঘ দূরত্বে লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার জন্য একীভূতভাবে কাজ করে। এছাড়াও, সিস্টেমটি জ্যামিং এবং স্পুফিংয়ের মতো সফট-কিল স্তর সংযোজনের মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীর সব শাখার জন্য একটি সমন্বিত এবং ব্যাপক প্রতিরক্ষা ঢাল প্রদান করতে পারে।‘ভার্গবাস্ত্র’ একটি অত্যাধুনিক কমান্ড-অ্যান্ড-কন্ট্রোল সেন্টারে সজ্জিত, যা উন্নত সিফোরআই (কমান্ড, কন্ট্রোল, কমিউনিকেশনস, কম্পিউটারস অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স) প্রযুক্তি ব্যবহার করে।