জোড়া সুখবরে ভারতবাসীর মন থেকে উবে যেতে চলেছে গত বছরের সেই খারাপ খবরটি। দুটি এমন ভাল খবর যা চন্দ্রযান ২–এর অসফল অবতরণের গ্লানি ভুলিয়ে দেবে। বলা যেতেই পারে, চাঁদের গায়ে চাঁদ লেগেছে। তবে এ ক্ষেত্রে আমাদের ভাবার, জানার অনেক কিছুই রয়েছে।২০১৯–এর ৭ সেপ্টেম্বর বিক্রম ল্যান্ডার চাঁদের মাটিতে আছড়ে পড়ে। কিন্তু বহাল তবিয়তে রয়েছে চন্দ্রযান ২। এর যে ক্যামেরা (Terrain Mapping Camera) ভূখণ্ডের ছবি পাঠায় সেটি অনেকদিন ধরেই কাজ করছে। ১২ অগস্ট ভারতের অন্তরীক্ষ গবেষণার জনক ড. বিক্রম আম্বালাল সারাভাইয়ের জন্ম শতবার্ষিকী পালিত হয়। আর তার মধ্যে সেই ক্যামেরার তোলা একটি ত্রিমাত্রিক (3D) ছবি ইসরো (Indian Space Research Organisation) প্রকাশ্যে আনায় রীতিমতো আলোড়ন তৈরি হয়েছে।ছবিতে একটি বিশাল গর্ত, যেমন চাঁদে থাকে, দেখা যাচ্ছে। এগুলিকে বলা হয় ক্রেটার। লাভা দ্বারা গঠিত প্রায় ১.৭ কিলোমিটার গভীর এই ক্রেটারের দেওয়ালের ঢাল ২৫ থেকে ৩৫ ডিগ্রি কোণে। অ্যাপেলো ১৭ এবং লুনা ২১ মিশনের অবতরণে তৈরি ক্রেটারের থেকে ২৫০–৩০০ কিলোমিটার দূরে এই ক্রেটারের নামকরণ করা হয়েছে বিক্রম সারাভাইয়ের নামেই। এই সারাভাই ক্রেটার–সহ চন্দ্রযান ২ থেকে পাওয়া সব তথ্য ও ছবি অক্টোবর মাস থেকে সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরা হবে বলে জানা গিয়েছে। আরেকটি খবর একেবারে অবাক করে দেওয়ার মতো। প্রয়াত বলিউড অভিনেতা সুশান্ত সিং রাজপুতের মতো অনেকেই চাঁদে জমি কিনে ফেলেছেন। কিন্তু সেখানে তাঁরা বাড়ি তৈরি করবেন কীভাবে? সেই সমস্যারও সমাধান করে ফেলল মানবজাতি। চাঁদে বসেই ইট তৈরি করা যাবে। হ্যাঁ। এমনই চাঞ্চল্যকর দাবি করলেন বেঙ্গালুরুর ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স এবং ইসরো–র একদল গবেষক। এ সম্পর্কিত গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে সিরামিক্স ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে।সেখানে অধ্যাপক অলোককুমার জানাচ্ছেন, চাঁদে ইট তৈরি করার প্রধান উপকরণ হল চাঁদের মাটি ও মানুষের রেচন পদার্থ অর্থাৎ মূত্রে যে ইউরিয়া পাওয়া যায় সেটি। ওই মাটির সঙ্গে ব্যাকটেরিয়া, ক্যালসিয়াম এবং ইউরিয়া মেশালে এক বিশেষ বিক্রিয়ায় ইট জাতীয় উপাদান তৈরি করা সম্ভব। তবে এ ক্ষেত্রে সিমেন্টের পরিবর্তে গুয়ার গাম অর্থাৎ এক জাতীয় আঠা দিয়ে গাঁথা হবে সেই ইট। এই ইট দিয়েই বাড়ি তৈরি করা যেতে পারে চাঁদে। তা হলে, আর অপেক্ষা কীসের, ব্যাগ গোছাতে শুরু করুন। কারণ, আপনারই অপেক্ষায় ‘চাঁদের বাড়ি’।