‘আমার ছেলে দেশপ্রেমের কাজই করছে।' 'অপারেশন সিঁদুর' সাফল্যের পর এমনই দাবি করেছেন এয়ার মার্শাল অবধেশ কুমার ভারতীর গর্বিত মা উর্মিলা দেবী। শনিবার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সংঘর্ষ বিরতির ঘোষণা করেছেন বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি। এরপরেই রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করেন তিন বাহিনীর অপারেশনসের ডিজি-রা। সেখানে সবচেয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে যাঁকে, তিনি এয়ার মার্শাল একে ভারতী। তাঁর বক্তব্য ছিল যেমন সপাট, তেমনই ক্ষুরধার, স্পষ্ট।এক কথায় ‘টু দ্য পয়েন্ট’। (আরও পড়ুন: গণতন্ত্রের পাঠে 'বদহজম', ভারতের বিরুদ্ধে তেলে বেগুনে জ্বলে উঠল বাংলাদেশ)
আরও পড়ুন: সংঘর্ষবিরতির পর পাকিস্তানের ওপর ক্ষুব্ধ 'বন্ধু' চিন? বড় দাবি রিপোর্টে
অতি সাধারণ, সহজ-সরল একে ভারতীর এই রূপ আগে দেখেননি বিহারের পূর্ণিয়ার ঝুল্লি কালা গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁরা বলছেন, খুব শান্ত ছেলে। গত বছরেই গ্রামের বাড়িতে এসেছিলেন। এক চিলতে কুঁড়ে ঘরে মানুষ হয়েছেন। এখনও বাড়িটা আছে। গ্রামের বাসিন্দা অনিল শর্মা ছোট থেকে দেখেছেন ভারতীকে। তিনি বলছেন, ‘একদম ওর বাবা-মার মতো হয়েছে। সাধারণ। এই গুণ ওর সন্তানদের মধ্যেও আছে। এত বড় অফিসার কিন্তু গ্রামে এলে সবার সঙ্গে কথা বলে। বডিগার্ড নিয়ে ঘোরে না। গ্রামের বড়দের পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম করে। কেউ ওর সম্পর্কে খারাপ কথা বলতে পারবে না।তার বাবা-মাও খুব সরল এবং সেই কারণে তারা এখনও খড়ের তৈরি ঘরে বাস করছে।' তিনি আরও বলেন,' অপারেশন সিন্দুরে ভারতীয় ভূমিকায় আমরা গর্বিত। পাকিস্তানও জানবে যে পূর্ণিয়ার ঝুল্লি কালা গ্রামের কেউ কিছু করেছে। ভারতী গোটা দেশে ঝুল্লি কালার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন।' (আরও পড়ুন: 'চোরের মায়ের বড় গলা', প্রমাণ করল পাকিস্তান, 'চুরি' ধরা পড়তেই টুকলি-গলাবাজি)
এয়ার মার্শাল একে ভারতীর বাবা-মায়ের প্রতিক্রিয়া
ছেলের সাফল্য সম্পর্কে ভারতীর বাবা জীবনলাল যাদব বলেন, ‘আমরা জানতাম না ছেলে অপারেশন সিঁদুরে এত বড় দায়িত্ব সামলেছে। কাগজ পড়ে জানতে পারি। কোনও গোপন তথ্যই আমাদের জানায় না। আমরা শুধু জানি ও সেনায় আছে। আমি খুব খুশি, অপারেশন সিঁদুর সফল হয়েছে, আমার ছেলেরও তাতে ভূমিকা আছে। আমরা সবাই গর্বিত।’ (আরও পড়ুন: ভারতের ‘ধমকে’ কূটনীতির পথে চিন, অপারেশন সিঁদুরে ‘নাক কাটার’ পর কী করল বেজিং?)
অন্যদিকে গর্বের সঙ্গে মা উর্মিলা দেবী বলেন, ‘আমার ছেলে দেশভক্ত। দেশপ্রেমের কাজই করছে। ঝুন্নি কালা, পূর্ণিয়ার নাম উজ্জ্বল করেছ। ওর স্ত্রী কাশ্মীরের মেয়ে... আমি আর কী বলব! আমার গর্ব ভাষায় প্রকাশ করার নয়, গোটা দুনিয়া দেখছে। আমি খুশি, দুনিয়া জানে কার ছেলে, কার নাতি দেশকে গর্বিত করেছে।’
ঝাড়খণ্ডের সৈনিক স্কুলে পড়াশোনা করেছেন একে ভারতী। তারপর পুনের ন্যাশনাল ডিফেন্স অ্যাকাডেমিতে। বরাবরই মেধাবী ছিলেন তিনি। ১৯৮৭ সালে ভারতীয় বিমানবাহিনীর ফাইটার স্ট্রিমে যোগ দেন। ২০০৮ সালে পান প্রেসিডেন্টস এয়ার ফোর্স পদক। ২০২৩ সালে তিনি এয়ার মার্শাল হন। সুখোই-৩০ স্কোয়াড্রনের কমান্ডিং অফিসার ছিলেন ভারতী। এয়ার মার্শাল হওয়ার আগে প্রয়াগরাজের সেন্ট্রাল এয়ার কম্যান্ডে সিনিয়র স্টাফ অফিসার ছিলেন তিনি। তাঁর মা উর্মিলাদেবী বলছেন, ‘ছোট থেকেই বলত মিলিটারি হব, সেনায় যোগ দেব, কথা রেখেছে।’