এক দশকের বেশি সময় কেটে গিয়েছে। অনেকেই আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ফের খুলতে চলেছে নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যানের প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। স্থানীয় মানুষ এবং পর্যটকদের জন্য আবার এই উদ্যোগ নিয়েছে জলপাইগুড়ি জেলা বন দফতরের বন্যপ্রাণ বিভাগ। এখন স্কুলগুলিতে গরমের ছুটি পড়ে গিয়েছে। তাই পর্যটকরা নানা জায়গায় ঘুরতে যাচ্ছেন। তার মধ্যে খবর এসে গিয়েছে খুলছে নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যানের প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র। তাই এখন সেখানে ভিড় বাড়বে। এটিকে জাতীয় উদ্যান হিসাবে আগেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছিল।
এদিকে একদা দার্জিলিং এবং অধুনা কালিম্পং জেলার অধীনে এই জাতীয় উদ্যানের অর্ধেক অংশে মানুষ এখনও পৌঁছতেই পারেনি বলা হতো। সূর্যের আলো মাটি ছুঁতে পারে না জঙ্গলের বহু অংশেই তাও বলা হতো। সেটাই দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। এবার তা ফের পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে। তবে তার আগে এনআইসি’র সংস্কার, সৌন্দার্যায়ন করা এবং ইলেক্ট্রিক্যাল ও ফায়ার অডিট করা হবে। সমস্ত কিছু ঠিক থাকলে দুর্গাপুজোর আগেই এই নেওড়াভ্যালি জাতীয় উদ্যানের প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রটি খুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: একরাতেই বিপুল টাকা ফাঁকা, দিঘার কাছে একাধিক এটিএম থেকে লুঠপাট, তল্লাশি পুলিশের
অন্যদিকে একমাত্র নেওড়াভ্যালিতে এমন জীববৈচিত্রের সন্ধান মিলেছে যা অন্য কোথাও দেখতে পাওয়া যায় না। ২০১৭ থেকে ২০১৯ সাল টানা তিন বছর বন দফতর নেওড়াভ্যালিতে জীববৈচিত্রের মূল্যায়ন শিবির করেছে। এই শিবির করার ফলে এমন বহু পোকামাকড়, পিপঁডের সন্ধান মিলেছে, যা ভারতের কোথাও দেখা যায়নি। ঘন জঙ্গলে ঘেরা জাতীয় উদ্যানে তাই পর্যটকরা এসে সময় কাটাতে চান। কালিম্পং জেলার নেওড়া ভ্যালি পাহাড়ের কোলে থাকা নৈসর্গিক দৃশ্যের সাক্ষ্য বহন করে। এই ভ্যালিকে ‘ভার্জিন ফরেস্ট’ বলা হয়। দেশের অন্য জাতীয় উদ্যানগুলির থেকে এটি অনেকটাই আলাদা। এখানে রেড পান্ডা, বাঘ, ভাল্লুকের উপস্থিতি পর্যটকদের কৌতূহল অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে।
তাছাড়া হিমালয়ের কোলে নতুন জীববৈচিত্রের তথ্য তুলে ধরলে বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি আদায়ে অনেকটাই সুবিধা মিলতে পারে বলে অনেকে মনে করেন। এখানকার বন্যপ্রাণ সম্পর্কে জানতে লাভার প্রধান সড়কের পাশে প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র খোলা হয়েছে। কিন্তু ২০১১ সালে সিকিমের ভূমিকম্পের পর এই কেন্দ্রটি সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। তার ফলে মন খারাপ হয়ে যায় পর্যটকদের। এবার খোলার সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এখন এই কেন্দ্রটি চালু করতে সংস্কারের প্রয়োজন। এই কাজ করতে ২০ লক্ষ টাকা খরচ হবে। এই বিষয়ে উত্তরবঙ্গের মুখ্য বনপাল ভাস্কর জেভি বলেন, ‘ভূমিকম্পে পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ক্ষতি হয়েছিল। তাই বন্ধ করে দেওয়া হয়। এখন কেন্দ্রটি আবার খোলার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে।’