সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী রিঙ্কু মজুমদারের একমাত্র সন্তান সৃঞ্জয় দাশগুপ্তের মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ দিলীপ ঘোষ যুবসমাজের উপর নেশার কুপ্রভাব নিয়ে বার্তা দিলেন। তাঁর মন্তব্যে আশঙ্কার সুর অত্যন্ত স্পষ্ট। তাহলে কি নেশার নাগপাশে জড়িয়েই অকালে এভাবে চলে যেতে হল বছর সাতাশের সৃঞ্জয়কে?
এ নিয়ে দিলীপ ঘোষ অবশ্য নির্দিষ্টভাবে কিছু বলেননি। কারণ, সেটা বলা সম্ভবও নয়। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানিয়েছেন, পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। তদন্ত এগোলে এবং ময়নাতদন্তের সম্পূর্ণ রিপোর্ট সামনে এলে নিশ্চয় এই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। তবে, এর নেপথ্যে যে নেশার প্রভাব থাকতে পারে, তেমন একটি সম্ভাবনা দিলীপের মন্তব্যে উঠে এসেছ।
তাঁর বার্তা, আজকালকার দিনে যুব সমাজের একটি বড় অংশ নেশার জালে জড়িয়ে পড়ছে। তার প্রভাব যে কত ভয়ঙ্কর হতে পারে, সৃঞ্জয়ের অকালমৃত্যুই তাঁর নমুনা। তাই এই বিষয়ে সকলেরই আরও সতর্ক ও সচেতন হওয়া উচিত। শুধুমাত্র সন্তানকে পড়াশোনা করালেই সব দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না।
দিলীপের কথায়, 'আজকে যুবসমাজের মধ্যে নেশার যে কী প্রভাব, তার এটা একটা নমুনা। ঠিক কী হয়েছিল, বলার আগেই তো ছেলেটা শেষ হয়ে গেল। আমাদের সবার কাছে এটা একটা বড় শিক্ষা। আমাদের ছেলেমেয়েরা কোথায় যাচ্ছে? কী করছে? তাকে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করে দিলেই দায়িত্ব শেষ হয় না। তারপরও এতবড় রিস্ক থেকে যায়। এটাই চিন্তার বিষয়।'
দিলীপ ঘোষ ও রিঙ্কু মজুমদারের বিয়ের মাত্র ২৫ দিনের মাথায় গতকাল (মঙ্গলবার - ১৩ মে, ২০২৫) সকালে নিউ টাউনের ফ্ল্যাট থেকে রিঙ্কুর প্রথম পক্ষের সন্তান সৃঞ্জয়ের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। ঠিক কী কারণে মৃত্যু, তা নিয়ে প্রথম থেকেই নানা ধোঁয়াশা ও জল্পনা শুরু হয়। প্রাথমিকভাবে উঠে আসে আত্মহত্যার তত্ত্ব। এমনকী পরিবারের সদস্যরা খুনের সম্ভাবনাও খতিয়ে দেখার দাবি তোলেন।
কিন্তু, এখনও পর্যন্ত যতটুকু তথ্য সামনে এসেছে, তাতে এমন কোনও ঘটনার প্রামাণ্য ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি। যদিও এখনও তদন্তের কাজ একেবারেই প্রাথমিক পর্যায়ে রয়েছে। সংবাদমাধ্যমে উঠে এসেছে, সৃঞ্জয়ের কিছু শারীরিক সমস্যা ছিল। যার জন্য তিনি নিয়মিত চিকিৎসাও করাচ্ছিলেন।
রিঙ্কুকে উদ্ধৃত করে সংবাদমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রায় বছর খানেক ধরে সৃঞ্জয় নিউরোর সমস্যায় ভুগছিলেন। তার জন্য তিনি নিয়মিত ওষুধও খেতেন। কিন্তু,ইদানীং নাকি ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করছিলেন না সৃঞ্জয়। ওষুধ ঠিকঠাক খাচ্ছিলেন না।
জানা গিয়েছে, গত সোমবার রাতে নাকি সৃঞ্জয়ের ফ্ল্যাটেই তাঁর কয়েকজন সহকর্মী ও বন্ধু এসেছিলেন। সেখানে রাতে পার্টি হয়েছিল। তারপর সকালেই এই অঘটন সামনে আসে। ছেলের এই অকালমৃত্যুতে একেবারে ভেঙে পড়েছেন রিঙ্কু। আক্ষেপের সুর শোনা গিয়েছে তাঁর স্বামী দিলীপের গলাতেও। তিনি বলেন, 'দুর্ভাগ্য আমার! পুত্রসুখ হল না, পুত্রশোক হল!'