বিরাট কোহলি তাঁর ক্রিকেট ক্যারিয়ারের সবচেয়ে অস্থির সময় নিয়ে এবার মুখ খুলেছেন। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সালের মধ্যে- যখন টিম ইন্ডিয়া এবং রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB) উভয় দলের অধিনায়ক হিসেবে প্রত্যাশার বোঝা তাঁর মানসিক সুস্থতার উপর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছিল, সেই চাপটা সামলানো কতটা কঠিন হয়ে উঠেছিল, তা নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছেন বিরাট। কোহলি জানিয়েছেন যে, ক্রমাগত স্পটলাইট এবং নেতৃত্বের দায়িত্বের কারণে অবশেষে তাঁকে টিম ইন্ডিয়া এবং আরসিবি উভয়- দলেরই অধিনায়কত্ব থেকে সরে যেতে হয়েছিল।
২০২১ সালের আইপিএল মরশুমের পর কোহলি আরসিবির অধিনায়কত্ব থেকে পদত্যাগ করেন এবং পরে ভারতের টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে বিসিসিআই তাঁকে ওডিআই অধিনায়কের পদ থেকে অপসারণ করে, কারণ তারা সাদা বলে একজনই অধিনায়ক রাখতে চেয়েছিল। যাইহোক সেই সময়ে জাতীয় দলের নেতৃত্ব নিয়ে তৎকালীন বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রকাশ্যে মতবিরোধও হয়েছিল। ২০২২ সালের গোড়ার দিকে কোহলি ভারতের টেস্ট অধিনায়কের পদ থেকে নিজেই পদত্যাগ করেছিলেন।
কোহলির কাছে লড়াইটা একটা সময়ে কঠিন হয়ে উঠেছিল
কোহলি আরসিবি পডকাস্টে মায়ান্তি ল্যাঙ্গারকে বলেছেন, ‘আমি আগেও এটা বলেছি- আমার অন্যান্য দলে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। বিশেষ করে যখন আমার ক্যারিয়ার তখন তুঙ্গে। ২০১৬ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত, আমি দল পরিবর্তনের পরামর্শ পেতে থাকি। এক পর্যায়ে এটা আমার জন্য খুব কঠিন হয়ে পড়ে কারণ অনেক কিছু ঘটছিল। আমি ৭-৮ বছর ধরে ভারতের অধিনায়কত্ব করেছি এবং ৯ বছর ধরে আরসিবির নেতৃত্ব দিয়েছি। আমার কাছ থেকে অনেক প্রত্যাশা ছিল।’
আরও পড়ুন: IPL 2025 ফাইনালের দিনই টিম ইন্ডিয়ার প্লেয়াররা উড়ে যাবেন ইংল্যান্ডে, বড় সিদ্ধান্ত BCCI-এর
সঙ্গে তিনি তিনি স্বীকার করেছেন যে, মানসিক চাপ তাঁর খেলার প্রতি ভালোবাসাকে প্রভাবিত করতে শুরু করেছিল। কোহলির দাবি. ‘আমি কখনও-ই অনুভব করিনি যে, আমার মনোযোগ সরে যাচ্ছে। আমি সব সময়ে এমন একটা জায়গায় থাকতাম, যেখানে আমি কী করব বুঝতে পারতাম না। আমি ২৪x৭ এই বিষয়গুলির মুখোমুখি হচ্ছিলাম, এবং এটা সত্যিই কঠিন হয়ে উঠছিল। আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম যে, যদি আমাকে ভালো ক্রিকেট খেলতে হয়, তবে আমাকে খুশিতে থাকতে হবে। আমি এমন একটা জায়গায় থাকতে চাই, যেখানে আমি কেবল ক্রিকেট খেলতে পারব, কোনও বিচারের সম্মুখীন না হয়ে।’
আরসিবি ছাড়ার বিষয়ে ভাবনা
কোহলি আরও প্রকাশ করেছেন যে সেই কঠিন বছরগুলিতে, তিনি আরসিবি ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভেবেছিলেন। কিন্তু জোর দিয়ে এও বলেছেন যে. তিনি কখনও-ই ‘প্রলোভনে’র কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়ার কথা ভাবেননি। কোহলির দাবি, ‘আমি বলব না যে, আমি প্রলুব্ধ হয়েছিলাম, কিন্তু আমি এটা নিয়ে ভেবেছিলাম। আমি নিজেকে জিজ্ঞেসা করেছিলাম, আমার কাছে কী বেশি মূল্যবান? আমি ভারতের হয়ে অনেক কিছু জিতেছি, অনেক প্রশংসা অর্জন করেছি। তাই আমাকে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছিল। তখন মনে মনে নিজেকে জিজ্ঞেস করেছিলাম, আমি কি নতুন করে একটা সেটআপে যেতে চাই এবং আবার সব কিছু ঠিকঠাক করতে চাই? তখনই আমি বুঝতে পারলাম যে, এখানে আমি যে সম্পর্ক তৈরি করেছি তা আরও মূল্যবান- এবং এত বছর ধরে গড়ে ওঠা পারস্পরিক শ্রদ্ধাও। এখন, আমি কেবল এটিকে টিকিয়ে রাখতে যাচ্ছি। আমরা জিতি বা হারি, ঠিক আছে। এটাই আমার বাড়ি।’