আইপিএল বিশ্বের সবচেয়ে বড় টি২০ ক্রিকেট লিগ। এটি তরুণ খেলোয়াড়দের তাঁদের প্রতিভা প্রদর্শনের জন্য একটি বড় প্ল্যাটফর্ম। বছরের পর বছর এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাচ্ছে, যে কারণে খেলোয়াড়দের আয়ও বেড়েছে। শুধু অভিজ্ঞ বা আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়রাই নন, এমন কী তরুণ খেলোয়াড় এবং ঘরোয়া ক্রিকেট খেলা খেলোয়াড়রাও এখন কোটি কোটি টাকা আয় করতে শুরু করেছেন। কিন্তু ভারতীয় কিংবদন্তি সুনীল গাভাসকর এই নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি মনে করেন যে, আনক্যাপড খেলোয়াড়দের খুব বেশি টাকা দেওয়া উচিত নয়। ২০২৫ সালের আইপিএলে আনক্যাপড প্লেয়ারদের নিয়ম পরিবর্তনের জন্য বিসিসিআই-এর উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন গাভাসকর। এবং এমএস ধোনির জন্য যে নিয়মের পরিবর্তন আনা হয়েছিল, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন গাভাসকর। ফের একই বিষয়ে সরব হলেন ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার।
ভারতীয় ক্রিকেটের ক্ষতি
সুনীল গাভাসকরের দাবি, বেশি টাকা দিলে খেলোয়াড়দের ক্রিকেটের প্রতি আবেগ এবং ভারতের হয়ে খেলার খিদে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তাঁর মতে, এটি কোনও ফ্র্যাঞ্চাইজির জন্য কোনও পার্থক্য আনবে না। এটা তাদের জন্য ভালো হতে পারে, কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটকে ধ্বংস করে দিতে পারে। গাভাসকর আরও বলেছেন যে, ধোনিকে লিগে থাকার অনুমতি দেওয়ার জন্য আনক্যাপড খেলোয়াড়দের নিয়মে পরিবর্তন করা হয়েছিল। এর সীমা ৪ কোটি টাকায় উন্নীত করা হয়েছিল।
সুনীল গাভাসকর সম্প্রতি তাঁর কলামে লিখেছেন, ‘বিপুল অর্থের বিনিময়ে কেনার পর, অনেক খেলোয়াড় তাদের খিদে এবং উৎসাহ হারিয়ে ফেলবেন। ফ্র্যাঞ্চাইজির কাছে এটা গুরুত্বপূর্ণ নাও হতে পারে, কারণ তারা মনে করে, এটাই ভালো। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেট এর কারণে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। একজন খেলোয়াড় সফল হোন বা না হোন, তাঁর চলে যাওয়াটা ভারতীয় ক্রিকেটের উপর প্রভাব ফেলবে। গত বছর মেগা নিলামের আগে মহেন্দ্র সিং ধোনি একজন আনক্যাপড খেলোয়াড় হয়েছিলেন। তাঁকে লিগে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য আনক্যাপড প্লেয়ারদের সীমা ৪ কোটি টাকা করা হয়েছিল।’
আরও পড়ুন: IPL 2025 ফাইনালের দিনই টিম ইন্ডিয়ার প্লেয়াররা উড়ে যাবেন ইংল্যান্ডে, বড় সিদ্ধান্ত BCCI-এর
বড় অঙ্কের টাকা পেলেও, প্লেয়াররা তাঁদের শক্তি দেখাতে অক্ষম
গাভাসকরের মতে, এখনও পর্যন্ত এমন কোনও আনক্যাপড খেলোয়াড় দেখা যায়নি, যাঁকে বিপুল পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে কেনা হয়েছে এবং বড় মঞ্চে নিজের প্রতিভা তিনি প্রমাণ করেছেন। প্রাক্তন ভারত অধিনায়কের সোজাসাপ্টা দাবি, ‘গত কয়েক বছরে এমন কোনও খেলোয়াড়ের নাম মনে পড়ছে না, যাঁকে বড় অঙ্কের বিনিময়ে কেনা হয়েছিল এবং দলে তাঁর অন্তর্ভুক্তিকে ন্যায্যতা দেওয়া হয়েছিল। হয়তো আগামী কয়েক বছরে তিনি অভিজ্ঞতার লাভ করে কিছুটা উন্নতি করবেন। কিন্তু যদি তিনি একই স্থানীয় লিগে খেলে যায়, তাহলে উন্নতির সম্ভাবনা খুব বেশি থাকবে না।’
প্রসঙ্গত, রশিখ দার সালাম আইপিএল ২০২৫-এর মেগা নিলামে সবচেয়ে দামি আনক্যাপড খেলোয়াড় হয়ে উঠেছেন। রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু তাঁকে ৬ কোটি টাকায় কিনে নেয়। কিন্তু এই ডানহাতি ফাস্ট বোলার এই মরশুমে এখনও পর্যন্ত মাত্র দু'টি ম্যাচ খেলতে পেরেছেন। গাভাসকরের মতে, ‘বড় দামের সঙ্গে উচ্চ প্রত্যাশাও আসে। অনেক তরুণ খেলোয়াড় এর সঙ্গে খাপ খাইয়ে চলতে ব্যর্থ হয়। পরের বছর যখন তাঁদের দাম কমে যায়, তখন পরিস্থিতি ভালো হতে শুরু করে।’