বাচ্চাকে দেখাশোনা করার জন্য চাকরি ছেড়েছিলেন এক মহিলা। এবার খোরপোষ সংক্রান্ত ওই মামলায় তাৎপর্যপূর্ণ রায় দিল দিল্লি হাইকোর্ট। সেখানে বলা হয়েছে ওই মহিলাকে খোরপোষ দিতে হবে। এক্ষেত্রে তাঁর কতটা আয়ের ক্ষমতা আছে সেটা নয়, তাঁর কতটা আয় ছিল সেটা বিবেচনার মধ্য়ে রাখতে হবে।
মহিলার স্বামীর আবেদনের ভিত্তিতে শুনানি হয়েছিল হাইকোর্টে। ২০২৩ সালে আদালত নির্দেশ দিয়েছিল ৭৫০০ টাকা করে ওই মহিলাকে ও তাঁর ৬ বছরের সন্তানকে খোরপোষ দিতে হবে। তবে স্বামী জানিয়েছিলেন আদালতে, তিনি একজন অ্য়াডভোকেট। মেরেকেটে জেলা আদালতে ১০,০০০ থেকে ১৫ হাজার টাকা আয় হয়। কিন্তু তাঁর স্ত্রী ছিলেন উচ্চ শিক্ষিতা ও তিনি ৪০হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা আয় করতেন। শিক্ষকতার চাকরি ছাড়ার আগে তাঁর এমনই আয় হত। খবর এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুসারে।
সেক্ষেত্রে আবেদনকারী জানিয়েছিলেন যেহেতু স্ত্রীর আয়ের ক্ষমতা আছে সেকারণে তিনি খোরপোষ দিতে চান না। তিনি জানিয়েছিলেন, তাঁর আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। সেকারণে তিনি খোরপোষ দিতে পারবেন না।
ওই দম্পতির ২০১৬ সালে বিয়ে করেছিলেন। ২০১৭ সাল থেকে তারা আলাদা থাকেন। স্ত্রীর উপর স্বামী অত্যাচার করতেন বলে অভিযোগ। তবে স্বামী জানিয়েছিলেন তিনি স্ত্রী , সন্তানের সঙ্গে থাকতে চান।
তবে মহিলার আইনজীবী জানিয়েছিলেন ওই স্বামী আর্থিকভাবে স্বচ্ছল। উকিল হিসাবে কাজ করা ছাড়াও ভাড়া থেকে তাঁর ইনকাম হয়। আইনজীবী জানিয়েছিলেন, বাচ্চা ছোট থাকার কারণে তিনি চাকরি করতে যেতে পারছেন না। তাছাড়া তিনি আগে কী করতেন তার উপর ভিত্তি করে তাঁকে খোরপোষ দেওয়া হবে না এটা ঠিক নয়।
মহিলা জানিয়েছিলেন, তিনি সিঙ্গল পেরেন্ট হিসাবে বাচ্চা দেখার জন্য চাকরি ছাড়তে বাধ্য় হয়েছিলেন। তিনি চাকরি ছেড়েছিলেন কারণ বাড়ির কাছে তিনি চাকরি পাচ্ছিলেন না। আর যাতায়াতে অনেকটা সময় চলে যেত।
আদালতের পর্যবেক্ষণ মহিলা যে যুক্তি দিচ্ছেন তাতে সারবত্তা রয়েছে। বিচারপতি স্বর্ণকান্ত শর্মা সুপ্রিম কোর্টের একটা রায়কে উল্লেখ করেছেন।
এদিকে স্বামী যে আয়ের কথা বলেছেন সেটা ফের দেখা হবে। তবে আদালত জানিয়েছে পারিবারিক আদালত স্বামীর মাসিক আয় ৩০,০০০ টাকা বলে দেখেছিল কারণ তিনি ২০১০ সাল থেকে কাজ করছেন। তবে অন্তর্বর্তী হিসাবে আবেদনকারীকে প্রতিমাসে ৭৫০০ টাকা করে স্ত্রীকে খোরপোষ ও সন্তানকে ৪৫০০ টাকা করে প্রতি মাসে দিতে হবে।